হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ইসরায়েলসহ হতবাক বিশ্ব। হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের এ যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও ধাক্কা দিয়েছে। বর্তমান অস্থিরতা ২০২৪ সালের নির্বাচনেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।
এরই মধ্যে বাইডেনের সমালোচকরা ইসরায়েলে সহিংসতার জন্য প্রেসিডেন্টের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে যাচ্ছেন। তারা এ হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে ইরানকে অভিযুক্ত করেছেন। দেশটিকে জ্বালানি তেল বিক্রি বাড়ানোর অনুমতি এবং কিছু বন্দি মুক্তির বিপরীতে জব্দকৃত ৬০০ কোটি ডলার অর্থ ছাড় নিয়ে মার্কিন নীতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তবে বাইডেন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এটি ‘হাস্যকর অভিযোগ’। ওই অর্থ শুধু মানবিক সহায়তায় ব্যয় করা যাবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার নিউ হ্যাম্পশায়ারে এক বক্তৃতায় ইরানের ওপর সব মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং ‘সন্ত্রাসে জড়িত’ মুসলিম দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিছু বিশেষজ্ঞ অবশ্য বলেছেন, ফিলিস্তিন ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে সম্প্রতি বাইডেন প্রশাসনের ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টার বিষয়টি হামাসের আক্রমণে অবদান রাখা কারণগুলোর একটি।
ইসরায়েল ইস্যুতে রিপাবলিকান দলে বিভক্তিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স দলীয় নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিবেক রামাস্বামী ও রন ডিসান্টিসের মতো তুষ্টির কণ্ঠস্বর রিপাবলিকান পার্টির ঐতিহ্যের বিপরীতে চলে গেছে। সম্প্রতি মার্কিন সিনেটেও ব্যাপক দ্বিধাবিভক্তি দেখা দিয়েছে। প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এবং তাঁর পদ হারানো এ বিভক্তির সর্বশেষ উদাহরণ। স্পিকার না থাকা সিনেটকেও স্থবিরতার মুখে ফেলেছে। হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাককল গত রোববার বলেন, আমি বিশ্বের সব হুমকির দিকে তাকিয়ে আছি। যখন আমরা নিজেরা বিভক্ত, অকার্যকর এবং আমাদের হাউসের স্পিকারও নেই, তখন আমরা আমাদের প্রতিপক্ষদের কী বার্তা দিচ্ছি?
বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলের জন্য কংগ্রেস অনুমোদিত সহায়তা প্যাকেজের প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে, কিছু রিপাবলিকান ইউক্রেনে তহবিল পাঠানোর বিরোধিতা করে ইসরায়েলে সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। রিপাবলিকান সিনেটর জোশ হাওলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে লিখেছেন, ইসরায়েল অস্তিত্বের হুমকির সম্মুখীন। ইউক্রেনের জন্য যে কোনো অর্থায়ন অবিলম্বে ইসরায়েলে পাঠানো উচিত। এদিকে ডেমোক্রেটিক পার্টি ঐতিহ্যগতভাবে ইসরায়েলের পক্ষে সোচ্চার ছিল। তবে গত কয়েক বছরে এই সমর্থন কমে গেছে। দলটির মধ্যে ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলে বসতি স্থাপনে আগ্রাসী সম্প্রসারণ নীতির বিরোধিতা তীব্র হয়েছে। গত জানুয়ারিতে গ্যালাপ পোল জরিপের ২২ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলিদের (৩৮ শতাংশ) চেয়ে বেশি ডেমোক্র্যাট ফিলিস্তিনিদের (৪৯ শতাংশ) প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছিল।
চলমান ইস্যুতে কয়েকজন ডেমোক্র্যাট ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন প্রকাশে সমাবেশ করেছে।