কাঁধের অস্ত্রোপচারের পর পুনবার্সন প্রক্রিয়ায় থাকায় খেলতে পারেননি গত আসরে। এবারও শঙ্কা মুস্তাফিজুর রহমানের বিপিএল খেলা নিয়ে। অ্যাঙ্কেলের চোট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরা পেসার থাকবেন পুনবার্সনে। অন্তত বিপিএলের শেষ ভাগের আগে তার মাঠে নামার সম্ভাবনা নেই। তাকে নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেবে না বিসিবি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজের আগে গা গরমের ফুটবল খেলায় চোট পান মুস্তাফিজ। সেই ইনজুরি তাকে ছিটকে দেয় সফরের বাকিটা থেকে। তখন ভাবা যায়নি, চোট বিপিএলে না খেলার মত গুরুতর। তবে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীস চৌধুরী শোনালেন শঙ্কার কথাই, ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, লেটারেল অ্যাঙ্কেল স্প্রেইন খুব খারাপ ধরনের ইনজুরি। পর্যাপ্ত পুনর্বাসন না হয়ে যদি মুস্তাফিজ খেলায় ফেরে, তাহলে ভবিষ্যতে এই ইনজুরি আবার ফিরে আসতে পারে। আমরা চাইব ও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক। এজন্য যদি বিপিএলের কিছু ম্যাচ যদি মিস করতে হয়, তাহলে আমরা মেনে নেব।’
দেবাশীস চৌধুরী জানালেন, এই কদিনে বেশ উন্নতি করেছেন মুস্তাফিজ। তার অবস্থার পরবর্তী পর্যালোচনা হবে দুই সপ্তাহ পর, ‘মুস্তাফিজের লেটারেল অ্যাঙ্কেল ইনজুরির আজ (গেলপরশু) ত্রয়োদশ দিন। গতকাল থেকে আমরা ফিজিওথেরাপি শুরু করেছি। প্রথম দিনের পর ওর উন্নতি বেশ ভাল। ফোলা অনেকটাই কমে গেছে। কিন্তু ক্লিনিক্যালি ইমপ্রæভমেন্ট থাকলেও, যেহেতু এই ইনজুরিটা গ্রেড-২ স্প্রেইন বা মডারেট টাইপের তো ওর ব্যাপারে আমরা সাবধানতা অবলম্বন করব। ওর রেগুলার ফিজিওথেরাপি ও কিছু ব্যায়াম চলবে। দুই সপ্তাহ পর আমরা ওকে রিভিউ করবো। তারপর পরবর্তী ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ঠিক করা হবে।’
পুরো ফিট হতে কতদিন সময় লাগবে, সেটি সুনির্দিষ্ট করে বলার উপায় নেই আপাতত। তবে একটি ধারণা দিতে পারলেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক, ‘ওর ইনজুরির দিন থেকে প্রায় দুই সপ্তাহ হয়ে গেছে। আরও যদি দুই সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে পারে, তাহলে একমাস হবে। এক মাস রিকভারির জন্য খুব ভাল একটা সময়। কিন্তু সমস্যা থেকে যাবে রিকভারির পরেও। অনেক দিন ধরে অনুশীলনের বাইরে থাকায় বোলিং অনুশীলনের জন্য কিছুদিন সময় দিতে হবে। সে সময়টা নির্ভর করবে ওর নিজের ওপর। ইনজুরির দিক থেকে ১ মাস ভাল সময়। ও যেহেতু পেস বোলার এক মাসের পরও যদি মনে রিহ্যাব করাতে হবে। শেষের দিকে পুনবাসন ও বোলিং প্র্যাকটিস হয়ত একসঙ্গে চলবে। সব মিলিয়ে ২-৩ সপ্তাহের মতো সময় লেগে যাবে।’
একের পর এক চোটে মুস্তাফিজের মানসিকভাবে ভেঙে পড়ারই কথা। তবে দেবাশীস চৌধুরী শোনালেন আশার কথা। মুস্তাফিজ ইতিবাচকই আছেন, ‘ওর সবচেয়ে প্রিয় ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি। এখানে ভাল পারফর্মও করে। গত বছর বিপিএল মিস করেছে। এ বছরও মিস করছে। আমরা ধারনা করেছিলাম, ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়বে। যেটা ওর পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ওর ব্যক্তিত্বটাই এমন যে ওর সঙ্গে যখন কথা বলা হচ্ছে, এই জিনিসটা আমি কখনও বুঝতে পারিনি ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। ও স্পোর্টিংলি নিচ্ছে, হাসিখুশির মধ্যে আছে। যে পরিমাণ ধারনা করেছিলাম, মানসিকভাবে ওরকম বিপর্যস্ত আমি দেখিনি। ইতিবাচক আছে। আমি নিশ্চিত, এটা ওর সেরে ওঠায় সাহায্য করবে।’
৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এবারের বিপিএল। মুস্তাফিজের খেলার কথা রাজশাহী কিংসে। শুধু এই দল নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেটও অপেক্ষায় থাকবে মুস্তাফিজের ফেরার। বিডিনিউজ