• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন

যেখানে খুশি যাক, হাসিনা ভারতে না এলেই হলো!

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪
ফাইল ছবি

সোমবার বিকেলে যখন শেখ হাসিনার গতিবিধি নিয়ে তখনো চরম অনিশ্চয়তা, ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার ছিলেন এমন একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদকে মেসেজ করেছিলাম, শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে ঢাকা ছেড়েছেন জানতে পারছি, আপনি কিছু শুনেছেন?

সাথে সাথে তিনি সংক্ষিপ্ত জবাব দেন, যেখানে খুশি যান, ভারতে না এলেই হলো!

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সঙ্কটের জেরে শেখ হাসিনাকে ভারতে পালিয়ে আসতে হলে সেটা নিয়ে যে দিল্লিতেই একটা প্রবল দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করবে, তা তার ওই মন্তব্যেই স্পষ্ট ছিল।

দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক আইডিএসএ-র সিনিয়র ফেলো তথা বাংলাদেশ গবেষক ম্ম্রুতি পট্টনায়ক এই কথাটাই আবার বলছেন একদম চাঁছাছোলা ভঙ্গীতে।

এদিন একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি শেখ হাসিনা যদি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাহলেও ভারতের উচিৎ হবে না সেটা মঞ্জুর করা।

ড: পট্টনায়ক যুক্তি দিচ্ছেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি সরকারের বিরুদ্ধে যে তীব্র আন্দোলন হয়েছে তার একটা স্পষ্ট মাত্রা ছিল ভারত বিরোধিতা।

ভারতকে যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের সবচেয়ে বড় সমর্থক হিসেবে দেখা হত, তাই হাসিনা বিরোধিতার আন্দোলনে স্বভাবতই মিশে ছিল ভারত-বিরোধিতার উপাদান।

তিনি বলেন, এই পটভূমিতে ভারত যদি তাকে এখন রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়, সেটা একটা ভুল বার্তা দেবে এবং বাংলাদেশের ভেতরে ভারত বিরোধিতাকে আরো উসকে দেবে।

ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত আবার যুক্তি দিচ্ছেন, ১৯৭৫-এ যে পটভূমিতে শেখ হাসিনাকে ইন্দিরা গান্ধী সরকার ভারতে আশ্রয় দিয়েছিল তার চেয়ে এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা।

তখন যেটা সম্ভব ছিল, এখন সেটা সম্ভব নয়। ওই সময়কার মতো শেখ হাসিনাকে তো আর পান্ডারা রোডের একটা ফ্ল্যাটে কার্যত কোনো নিরাপত্তা ছাড়াই রাখা যাবে না, এখন সম্পূর্ণ অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তসলিমা নাসরিনও নন যে দিল্লি পুলিশের পাহারায় শহরের কোনো ফ্ল্যাটে তাকে রাখা যাবে। আর এই সিদ্ধান্তের ‘জিওপলিটিক্যাল রিস্ক’-টাও অনেক বেশি, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।

এই পর্যবেক্ষকরা দীর্ঘমেয়াদে শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার বিরুদ্ধে যুক্তি দিলেও সম্পূর্ণ অন্য কথা বলেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

তিনি যদি কোনো কারণে ভারতে থাকতে চান, তার মর্যাদা ও সম্মান অনুযায়ী যথাযথ পর্যায়ে (অ্যাপ্রোপ্রিয়েট লেভেল) তার সাথে আমাদের এনগেজ করতে হবে। এখানে দ্বিতীয় কোনো ভাবনার অবকাশ নেই, বলছেন শ্রিংলা।

সোজা কথায়, পুরনো ইতিহাস ও এতদিনের সম্পর্ককে মাথায় রেখে তার ইচ্ছাকে ভারতের সম্মান দিতে হবে এটাই তার যুক্তি।

ভারতে শাসক দল বিজেপির ঘনিষ্ঠ ও পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ শুভ্রকমল দত্ত আবার মনে করেন, এখনই স্থায়ীভাবে না হলেও শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারত তার দায়িত্ব এড়াতে পারে না।

তিনি বলেন, যতদিন না তৃতীয় কোনো দেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে তিনি আশ্রয়ের নিশ্চয়তা পাচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত ভারতের উচিৎ হবে তাকে সসম্মানে ভারতেই রাখা।

সূত্র : বিবিসি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ