• সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:১৬ অপরাহ্ন

সহ-সমন্বয়ক ঢাবি শিক্ষার্থী দুই দিন ধরে নিখোঁজ

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ হাসানকে গত দুইদিন ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তার সহপাঠীরা। পরিবারের সঙ্গেও খালেদের যোগাযোগ নেই বলে জানান তারা।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) তার বন্ধু ও সহপাঠীরা জানান, শুক্রবার বিকেল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ মাহিন বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকে খালেদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওর বাসায় কেউ ওর ব্যাপারে জানেন না। আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে নানা হুমকি ছিল ওর জীবনে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাকে দ্রুত খোঁজে বের করার অনুরোধ জানান তিনি।

এদিকে খালেদ হাসানের নিখোঁজের বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদন এসেছে ঢাকা মেইলের কাছে। এতে বলা হয়, খালিদ হাসান এর ব্যবহৃত মোবাইলের রেকর্ড ও তার ছোটবেলার বন্ধু ওমর ফারুকের দেওয়া তথ্যমতে গত ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তিনি তার বন্ধু ওমর ফারুকসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশ এলাকায় ঘোরাফেরা করেন।

পরবর্তীতে গত ২০ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে তিনি পূর্বাচল জলসিঁড়ি আবাসিক এলাকায় অনুষ্ঠিত ২১ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণ করেন। ম্যারাথন শেষে তার বন্ধুকে ফার্মগেট এলাকায় নামিয়ে দিয়ে তিনি সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে তার মোটরসাইকেলে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কক্ষে ফিরে আসেন। হলে থাকা সিসি ক্যামেরায় তা দেখা গেছে। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি এখনো হলে রয়েছে।

সিডিআর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি গত শুক্রবার সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে সর্বশেষ তার এক বন্ধুর সাথে কথা বলেন, যিনি ঢাকার বাইরে আছেন। তার রুমের দরজা বাহির থেকে তালা দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, তাকে খুঁজে না পেয়ে বন্ধুরা তার তালাবদ্ধ রুম খুলে তার ব্যবহৃত একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল পায়। ওই মোবাইল তার বন্ধুদের মাধ্যমে ডিভি অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। মোবাইল পর্যালোচনা করে দেখা যায় হোয়াটসঅ্যাপ আনইন্সটল করা। যাতে ভিকটিম নিজে আনইন্সটল করার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। তার হোয়াটসঅ্যাপ ডাটা রিস্টোর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ক্যাম্পাসে তাকে বিকেল তিনটায় জিহাদ নামের একজন ছেলে দেখেছে বলে জানা যায়। তার ছোটবেলার বন্ধু ওমর ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে পূর্বেও তার পিতার সাথে ঝগড়া করে মোবাইল বন্ধ করে অন্যত্র আত্মগোপন করে ছিল। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

তার সহপাঠী আল মাহমুদ জানান, শেষবার গত বৃহস্পতিবার রাতে আমাকে বলেছিলো যে ও ম্যারাথনে যাবে, তারপর শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে দুইবার কল দিয়ে ওয়েটিং পাই এবং আমার কল সাধারণত ও ইগনোর করে না বা পরে কল করে। কিন্তু পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে কল দিয়ে ফোন বন্ধ পাই। ওর নিখোঁজ হওয়াটা বিস্ময়ের। অন্তত আমাকে জানাত। কিন্তু আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। ওর বাসায় কেউ এ ব্যাপারে জানেন না, ওর আব্বু, ওর চাচার সাথে একাধিকবার কথা হয়েছে তারাও জানেন না কিছু। আমি চাই অতি দ্রুত আমাদের বন্ধু আমাদের কাছে ফিরুক।

প্রসঙ্গত, আন্দোলনে সক্রিয় ছাত্রদের ধরে টার্গেট কিলিং করছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থী শিহান ও সীমান্ত হত্যাকাণ্ড দিয়ে এর সূত্রপাত। এতদিন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ আক্রান্ত হলেও এবার খোদ ঢাবি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এমনটা হওয়ার আশঙ্কা করছেন সকলে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ