• মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও এস জয়শঙ্করের সাথে বৈঠক হতে পারে ওমানে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সম্প্রতি ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বসে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বক্তব্য দিচ্ছেন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে কথা বলেন তিনি। এ নিয়ে দেশে নতুন করে তৈরি হয় উত্তেজনা। ওইদিন রাতেই ক্ষোভে সাধারণ মানুষ ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেন।

এছাড়া তার এই বক্তব্যের পর ঢাকা ও দিল্লিতে বাংলাদেশ- ভারতের দূতদের তলব-পাল্টা তলবের মুখে পড়তে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই আগামী সপ্তাহে ওমানের রাজধানী মাস্কটে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। ভারতের মাটিতে বসে দেশের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্যের কতটা প্রভাব পড়বে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে, এটাই এখন আলোচনা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ওমানের মাস্কাটে ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্স হবে। সেখানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ দেবেন। কনফারেন্সের ফাঁকে দুজন বৈঠকে বসবেন। উভয়পক্ষ এ বৈঠকের বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

জানা গেছে. এস জয়শঙ্করকে শেখ হাসিনাকে ‘ফুলস্টপ’ করানোর বার্তা দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। যাতে ভারতের মাটিতে বসে তিনি এমন বক্তব্য না দেন যাতে দেশ অস্থিতিশীল হয়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদান করছেন, যা বাংলাদেশের জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। গত ৫ ফেব্রুয়ারি তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ধানমন্ডির ৩২ নাম্বারে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেই বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এরইমধ্যে অবস্থান পরিষ্কার করেছে। এ বিষয়ে ৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি মন্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বক্তব্য প্রদান অপ্রত্যাশিত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা প্রতিবেশী দেশটিতে নানা ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি হতে দেখেছি। কিন্তু বাংলাদেশ কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো বক্তব্য প্রদান করে না। অন্যদের কাছ থেকেও বাংলাদেশ একই ধরনের ব্যবহার প্রত্যাশা করে।

এদিকে দেশের অপর একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনাকে থামানোর পাশাপাশি প্রত্যার্পন চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত দিতেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান জানাতে পারেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এছাড়া তাদের মধ্যে সীমান্ত, ভিসা, তিস্তা, গঙ্গা চুক্তির নবায়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে ফেরত পেতে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, এতে কাজ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলবের পর সাংবাদিকদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতকে আমরা লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি, শেখ হাসিনাকে সংযত করার জন্য। আমরা বলেছি, ওনি যেন বক্তব্য না দেন, যেটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যাচ্ছে। আমরা এটার কোনো জবাব পাইনি এখনও। গত কয়েকদিনের কার্যকলাপের কারণে আমরা আরেকবার ভারতকে প্রতিবাদ নোট দিয়েছি। শেখ হাসিনা বক্তব্য দিয়ে দেশে এক ধরনের অস্থিশীলতা উসকে দিচ্ছেন।

মাস্কটে ইন্ডিয়ান ওশেন কনফারেন্সের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও কৃষি মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার। এছাড়া, কনফারেন্সে যোগ দেওয়া আরও কিছু দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ