ওসমান সরদার:- প্রাকৃতিক লীলাভূমি খ্যাত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শীত মৌসুম শেষ হলেও সকলের নজর কাড়ছে পরিযায়ী পাখি। এসকল পাখির মধ্যে রয়েছে, পাতি সরালি, জিরিয়া হাঁস, দেশী পানকৌরি, বড় পানকৌরি ও সাপপাখি উল্লেখযোগ্য।
সাধারণত জাবিতে পরিযায়ী পাখির আনাগোনা শুরু হয় শীত মৌসুমের শুরুতে। এসময় শীত প্রধান অঞ্চল থেকে নানা প্রজাতির পাখি এসে প্রাণবন্ত করে লেকগুলো। শীত মৌসুম শেষ হওয়ার সাথে সাথে পাখিগুলোও পাড়ি জমায় আগের ঠিকানায়। তবে এবছর জাবিতে দেখা মিললো ভিন্ন চিত্রের। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটেছে জাবির কয়েকটি লেকে। এরমধ্যে পরিবহন চত্বর সংলগ্ন (লন্ডন ব্রীজ) লেকে এসেছে সবচেয়ে বেশি পাখি। এছাড়া আলবেরুনী হল সংলগ্ন লেক ও ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারে শীতের শুরুতে পাখি এসেছিল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিবহন চত্বর সংলগ্ন লেকে জলকেলিতে মেতেছে পাতি সরালি জাতীয় পাখি। খাদ্যের খোঁজে লেকের একপাশ থেকে অন্য পাশে বিচরণ করে যাচ্ছে। পানির মধ্যে ডুব দিয়ে নিচ থেকে খাবার সংগ্রহ করছে। এছাড়া কচুরিপানার থেকে পোকামাকড় সংগ্রহ করে খাচ্ছে পাখিগুলো। এই লেকে প্রায় ৭০০ পাখি রয়েছে বর্তমানে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরিত্র ছাত্তার বলেন, এ বছর ক্যাম্পাসে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা একেবারেই কম ছিল এবং ট্রান্সপোর্ট লেক ও আলবেরুনী এক্সটেনশন লেকে পাখি একেবারেই বসেনি যেটাতে মূলত দূর দেশ থেকে পাখি আসতো।
এটার বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে টের পেলাম এই অঞ্চলে কচুরিপানা একসময় থাকায় এখানে দেশীয় জলজ উদ্ভিদগুলো বাড়তে পারত না তার সাথে পরিযায়ী পাখির খাবার যেমন ডাকউইড, টুপাপানা জাতীয় উদ্ভিদগুলো না থাকায় ওরাই অঞ্চলে বসতো না। এই লোকটাতে মূলত মাছ খায় এই ধরনের পাখির আধিক্য দেখা যাচ্ছিল । তারই ভিত্তিতে এই অঞ্চলে ডাক উইড ও টোপাপানা কিছু দেই, এরা যেহেতু ফ্রি ফ্লটিং প্লান্ট, খুব তাড়াতাড়ি পুকুরে বেড়ে উঠে। এবং এই পুকুরে আমরা প্রায় সাড়ে তিনশোর মত পাখি দেখতে পাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি গবেষক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বলেন, সাধারণত মার্চের শেষে পরিযায়ী পাখিরা ফিরে যায়। ফিরতি পথেই মুলত তারা এখন জাবির লেকগুলোতে বিচরণ করছে। গত দু সপ্তাহে আমাদের ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারে এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি পাখি অবস্থান করছে। আরেকটি বিষয় হলো, আমাদের লেকগুলো যখন পরিস্কার করা হয় তখন তা পাখির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ছিল না। তবে বর্তমানে লেকগুলো পাখির খাদ্য রয়েছে এবং ফিরতি পথে তারা এখানে বসেছে।