• বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

তিন মাস পর খুলা হয়

কত টাকা পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জানালেন সভাপতি

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক প্রতি তিন মাস পর খুলে পাওয়া যায় কোটি কোটি টাকা

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক প্রতি তিন মাস পর খোলা হয়। পাওয়া যায় কোটি কোটি টাকা। এ তথ্য অনেকের জানা। কিন্তু, এ পর্যন্ত কী পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে, এ তথ্য সবার কাছে এতদিন ছিল অজানা। প্রশাসনের কাছে বিষয়টি ছিল অতি গোপনীয়। এমনকি সাংবাদিকরা বারবার চেষ্টা করেও মসজিদ পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে এ তথ্য বের করতে পারেননি।

অবশেষে জানা গেছে পাগলা মসজিদের টাকার পরিমাণ। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে মসজিদ ও এতিমখানা পরিচালনা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনুদান দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট টাকা কিশোরগঞ্জের রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা রাখা হয়েছে। সকল খরচ বাদে এ পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

জেলা প্রশাসক জানান, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা দিয়ে মসজিদের জন্য বহুতল ভবন ও ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এতে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয় হবে। এছাড়াও দানের টাকা মসজিদের জন্য জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য উন্নয়নকাজে ব্যবহার করা হবে।

শ‌নিবার (১২ এপ্রিল) সকা‌লে পাগলা মস‌জি‌দের ১১টি লোহার সিন্দুক খু‌লে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা। এসব টাকা গণনায় অংশ নিয়েছেন ব‌্যাংকের ৬০ কর্মচা‌রীসহ ৩৭০ জন।

সকাল সা‌ড়ে ৭টার দি‌কে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পু‌লিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীসহ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা‌দের উপ‌স্থি‌তিতে মস‌জি‌দের নিচতলায় বি‌ভিন্ন স্থা‌নে থাকা দান‌সিন্দুকগু‌লো একে একে খোলা হয়। এরপর প্লা‌স্টি‌কের বস্তায় টাকা ভ‌র্তি করে নেওয়া হয় দ্বিতীয় তলায়। মে‌ঝে‌তে ঢে‌লে শুরু হয় টাকা গণনা।

দানবা‌ক্সে পাওয়া ২৮ বস্তা টাকা গণনার কা‌জে অংশ নিয়েছে পাগলা মস‌জিদ নূরানী কুরআন হা‌ফি‌জিয়া মাদ্রাসার ১০০ জন শিক্ষার্থী, জামিয়াতুল ইমদাদীয়ার ২০০ শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মচা‌রীসহ ৩ শতা‌ধিক মানুষ।

টাকা গণনা চলাকালে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার ৪ মাস ১১দিন পর দানসিন্দুক খোলা হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ গত ৩০ নভেম্বর দানসিন্দুক থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। এবার আরো এক‌টি দান‌সিন্দুক বাড়ানো হ‌য়ে‌ছে।

জনশ্রুতি আছে, এক আধ্যাত্মিক সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চ‌রে। ওই সাধকের মৃত‌্যুর পর এখা‌নে নি‌র্মিত মস‌জিদ‌টি পাগলা মসজিদ হিসেবে প‌রি‌চি‌তি পায়। পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়, এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ‌্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন। কয়েক বছর ধরে দিনে দিনে বাড়ছে দানের টাকার পরিমাণ। এখানে টাকার পাশাপাশি স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রীও দান করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ