• সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
ফ্যাসিস্ট আমলা-মিডিয়া আওয়ামী পুনর্বাসনে সমন্বিতভাবে কাজ করছে : হাসনাত ‘বোমা’ বিস্ফোরণে বিচ্ছিন্ন হলো শিশুর কব্জি ১৯ টাকা দাম বাড়ল এলপি গ্যাসের পশ্চিমাদের উদ্বেগ বারিয়ে নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করলো ইরান রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ চাষিদের মন্ত্রীত্ব হারানো টিউলিপের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের অপরাধ সংস্থা উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণ হলো চাঁদাবাজি: অর্থ উপদেষ্টা ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রথম পর্ব রাস্তায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট নারীরা: উমামা ফাতেমা ঢাবিতে প্রথমবারের মতো হলো হিজাব র‍্যালি

ধর্ষণের কথা প্রকাশ করবে বলায় হত্যা করা হয় শিশু সিমুকে

আপডেটঃ : শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে পালাক্রমে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে দশ বছর বয়সী শিশু সিমু আক্তারকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া লম্পট বাচ্চু মিয়া (৫০) ও আমির হামজা (৩৫)। সিমু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো.জামির হোসেন জিয়া বৃহস্পতিবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের হাতিমারা গ্রামের কৃষক সাইদুল হকের ঘরের খাটের নিচ থেকে তাঁর মেয়ে সিমু আক্তারের ক্ষতবিক্ষত-রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশ। শিশু সিমু স্থানীয় হাতিমারা মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।এদিকে, এই ঘটনায় ওইদিন রাতে বাচ্চু মিয়াকে সন্দেহভাজন হিসেবে অভিযুক্ত করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন সিমুর পিতা সাইদুল হক। বাচ্চু মিয়া একই গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। সে পাশের নাথেরপেটুয়া বাজারে বিকেল বেলায় ফুতপাতে হালিম বিক্রি করতো।ঘটনার পর পুলিশ প্রথমে বাচ্চু মিয়াকে আটক করে বুধবার সকালে তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমতে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় একই গ্রামের মোস্তফা ভূঁইয়ার ছেলে আমির হামজাকে। আমির গ্রামের ধান খেতে পানি সেচের ব্যবসাা করতো বলে জানা গেছে।মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো.জামির হোসেন জিয়া বলেন, ঘটনার দিন সকাল ১১টার দিকে বাচ্চু মিয়া ও আমির হামজা কৃষক সাইদুলের বাড়িতে প্রবেশ করে। ওই কৃষকের স্ত্রী সিলেটে থাকায় তাদের টার্গেট ছিলা সাইদুলের সপ্তম শ্রেণিতে পড়–য়া মেঝ মেয়ে (১৭) ধর্ণষ করা। কিন্তু সে তখন স্কুলে ছিল। বাড়িতে সেসময় একাই ছিল সিমু।বাড়িতে প্রবেশ করে বড় মেয়েটিকে দেখতে না পেরে ওই শিশুর দিকেই চোখ পড়ে দুই লম্পটের। পরে তারা দু’জনে মেয়েটি জোরকরে ঘরে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করে। দুই লম্পটের ধর্ষণের পর শিশু মেয়েটি খুবই অসুস্থ্য হয়ে পড়ে এবং সে বলে এই ঘটনার তার বাবাকে বলে দিবে।এ কথা বলার সাথে সাথেই ঘর থেকে বটি নিয়ে বাচ্চু শিশুটির মুখে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। পরে দা হাতে নিয়ে আমির হামজাও কুপিয়ে মেয়েটিকে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে। তারা শিশু মেয়েটির যৌনাঙ্গেও কুপিয়েছে।ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত বাচ্চু বুধবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় এই ঘটনার অপর হোতা আমির হামজাকে। আমির হামজাও প্রাথমিকভাবে এসব ঘটনার কথা স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে নেওয়া হয়েছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য।

উল্লেখ্য, উপজেলার হাতিমারা গ্রামের পূর্ব-উত্তর পাশের ফসলের মাঠের মধ্যখানে বাড়ি নির্মাণ করে সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন কৃষক সাইদুল হক। হত্যার ঘটনার এক সপ্তাহ আগে সাইদুলের স্ত্রী রাবেয়া বেগম সিলেটে বেড়াতে যায়। গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে সাইদুল মাঠে কৃষি কাজ করতে ঘর থেকে বের হয়। সাইদুল বাড়ি থেকে বের হবার সময় সে তার ছোট মেয়ে সিমুকে বলে যায়, ‘পুরো বাড়ি যেহেতু খালি তুই নানার বাড়িতে চলে যা’। সিমুর নানার বাড়ি একই গ্রামে। ওদের বাড়ির কাছাকাছি।

সর্বশেষ ওইদিন দুপুরে মাঠের কৃষি কাজ শেষে বাড়ি ফিরে সাইদুল দেখেন ঘরের দরজা খোলা। এরপর ঘরে প্রবেশ করে সব কিছু এলোমেলো দেখতে পান তিনি। এক পর্যায়ে খাটের নিচে সিমুর ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান তিনি। খবর পেয়ে ওইদিন লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর পুলিশের সদস্যরা দেখতে পান শিশু মেয়েটির উপর অমানবিক নির্যাতনের পর তাকে দা ও বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত দা ও বটিও ঘর থেকেই উদ্ধার করে পুলিশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ