ভোলা প্রতিনিধি ॥
ভোলার লালমোহনে কালবৈশাখী ঝড়ে আব্দুস শুকুর আলী নামে এক মাঝি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক ও প্রায় ৪ শতাধিক ঘর-বাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে লালমোহন উপজেলার বিভিন্নস্থানে এসব ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকা ডুবে এক মাঝি নিহত হয়। এছাড়া স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদসহ আরো ৫০ টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে পড়ে। গাছ-পালা উপড়ে পড়ে প্রায় সহ¯্রাধিক। ঘর পরে ও গাছের চাপায় আহত হয় অন্তত ৫০ জন। আহতদের লালমোহন সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর পোনে দুইটার দিকে আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড় হানা দেয়। মূহুর্তে বাতাসের বেগ ও ভারী বর্ষণ শুরু হয়ে চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পুরো উপজেলা অন্ধকারে ঢেকে যায়। স্কুল চলাকালিন সময় এ ঝড় শুরু হলে পৌর এলাকার মধ্যে লালমোহন কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পূর্ব লালমোহন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মায়ানগর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আব্দুল ওহাব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পূর্ব মহেশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব রমাগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নাঙ্গলখালী স¤্রাট ওয়েল এন্ড ফলোয়ার মিলের টিনের ঘর ভেঙ্গে পড়ে ও ওয়াল সেড ভবনের টিনের চালা উড়ে বিধ্বস্ত হয়। এসময় কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল্লাহ, যুগল চন্দ্র শীল, মঈনুল ইসলাম, মাহাদী, মিতা মজুমদার, ইমরান, মারুপ, নাঈমুল, কমল কৃষ্ণ, পারভেজ ও মায়ানগর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র শান্ত, হৃদয়, রিয়াজ, শুভ আহত হয়। লালমোহন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ইমা হক, চরভূতা ১নং ওয়ার্ডের মাসুদ (৪৫), নয়ানীগ্রামের তাজু আহত হয়।
এছাড়া করিম রোড এলাকার মরিয়ম বেগম নয়নের ঘর, ৮নং ওয়ার্ডের প্রতিবন্ধী ফারুক, মোঃ আলমগীর, খালপাড়ের হারিছ আহমেদসহ পৌর এলাকা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অন্তত ৩শ ঘর বিধ্বস্ত হয় বলে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানান। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন’র সুপারিশে তালিকা করে প্রত্যেকের জন্য ২ বান্ডিল ডেউ টিন, ২০ কেজি চাল ও নগদ ৬ হাজার টাকা বিতরণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি জানান, ক্ষতিগ্রস্থ তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত পূর্ণ বিধ্বস্ত ঘরের সংখ্য ১৫০ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের সংখ্যা ২৫০ পাওয়া গেছে। এছাড়া স্বরুপকাঠি থেকে পাঠকাঠি নিয়ে আসা একটি নৌকা ফরাজগঞ্জের কাছে তেঁতুলিয়া নদীতে ডুবে মাঝি আব্দুস শুকুর আলী নিহত হয়। তার বাড়ি যশোর। কালবৈশাখী ঝড় শেষ হওয়ার পরপরই লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এছাড়াও লালমোহন পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ¦ সফিকুল ইসলাম বাদল, পৌর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মেজবা উদ্দিন আরজু, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহেদুল ইসলাম নবীন, কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আহত ছাত্র/ছাত্রীদের লালমোহন সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার খোজ খবর নেন।