• বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:০১ অপরাহ্ন

শেষ নিঃশ্বাসের প্রহর গুনছে এ দম্পতি জীবনযুদ্ধে পরাজিত জুড়ান মাঝি গল্প

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৮

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি॥
নাটোরের সিংড়া উপজেলার শৈলমারী ঘাটের জুড়ান মাঝি, বয়স প্রায় ১০০ বছরের বেশি। দীর্ঘ প্রায় ৪৫-৫০ বছর থেকে নৌকার হাল এবং পাল তুলে নদীতে পারাপার করেছেন শত শত মানুষ, ছাত্রছাত্রী, যানবাহন। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে শুধুমাত্র মানুষের সুখের তরি বয়েছেন। বয়সের কারনে নুঁয়ে পড়েছেন। এ দম্পতি ১৪ সন্তান জন্ম দিলেও তাদের সংসারে দু সন্তান বেঁচে আছে। সেই সন্তান আঃ করিম ও আঃ খালেকও বৃদ্ধ বাবা মাকে ছেড়ে চলে গেছেন। এখন জুড়ান মাঝির একমাত্র অবলম্বন তার স্ত্রী কদভানু। সেও নিতান্ত বৃদ্ধা, কিন্তু জীবনের তাগিদে জুড়ান মাঝির জীবন জুড়ে আছেন তিনি। রাস্তার ধারে ছোট একটি কুঁড়ে ঘরে কুঁপির আলোতেই কেটে যাচ্ছে সীমাহীন কষ্টের জীবন। এ যে অকৃত্রিম ভালোবাসা। এলাকার মানুষ টুকটাক বাজার করে দেয়, আর জুড়ান মাঝির স্ত্রী অতি কষ্টে রান্না করেন। কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে কাটাতে হয় দিন তাদের। জীবনে কত জনের স্বপ্নের সারথী সেই জুড়ান মাঝি। সেই জুড়ান মাঝি আজ বড়ই অসহায়। শেষ নিঃশ্বাসের প্রহর গুনছে এ দম্পতি।
জানা যায়, সিংড়া পৌল শহরের ১১নং ওয়ার্ডের শৈলমারী ঘাটে জুড়ান মাঝি ৪৫-৫০ বছর নৌকায় করে শত শত মানুষ, ছাত্রছাত্রী, যানবাহন পারাপার করেছেন। এখন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি ও পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসের প্রচেষ্টায় সেই গুড়নাই নদীতে প্রায় ৩ কোটি ৭৭লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রীজ নির্মিত হচ্ছে। বঞ্চিত এলাকার রাস্তা-ঘাট,ড্রেনেজ ব্যবস্থা,বিদ্যুত সহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু জুড়ান মাঝির সংসারে উন্নতি হয়নি। একমাত্র পৌরসভা কর্তৃক বয়স্ক ভাতার পান তিনি। তাছাড়া দৈনন্দিন বাজারের জন্য মানুষের মুখপ্রাণে চেয়ে থাকতে হয় তাদের। এলাকার মানুষরাও তাদের সার্ধ্যমত সাহায্য করেন তাদের।
কাউন্সিলর নওশাদ আলী মোল্লা জানান, শৈলমারী খেয়াঘাট গুড়নাই নদীতে দীর্ঘ ৪০-৫০ বছর মাঝি হিসেবে নৌকায় মানুষ ও যানবাহন পারাপারের কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে অসুস্থ এবং অসহায় জুড়ান মাঝি ও  তার স্ত্রী। দুই ছেলে থাকলেও বৃদ্ধ বাবা মায়ের খোঁজ খবর রাখে না। এলাকার মানুষ একটু দেখভাল করে।
সিংড়া পৌরসভার মেয়র মোঃ জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমরা তাকে একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিয়েছি। সুযোগ পেলে অপরজনকেও করে দিবো এবং দ্রুত তার বাড়িতে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দেওয়ার চেষ্টা করছি। স্থানীয় কাউন্সিলরকে সার্বক্ষনিক তাদের খেয়াল রাখার জন্য বলা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ