রংপুর অফিস॥
রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় ভানু শংকর ভট্টাচার্য নামে এক পল্লী চিকিৎসক নিজেকে মুসলমান ও হিন্দু পরিচয় দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এছাড়া পরিচয় গোপন করে হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের দুই নারীকে বিয়ে করেছেন। বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ায় এলাকায় তোলপার সৃষ্টি হয়েছে । প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের পূর্ব ব্রাক্ষণীকুন্ডা বামন পাড়া গ্রামের মৃত ভবানী শংকর ভট্টাচার্য এর ছেলে পল্লী চিকিৎসক ভানু শংকর ভট্টাচার্য। স্ত্রী সুমী রায় ও ১৪ বছরের ছেলে তনয় ভট্টাচার্যকে নিয়ে সে একই গ্রামে বসবাস করে। সে একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে পাওটানাহাট বাজারে ওষধের দোকান চালিয়ে জীবন যাপন করে আসছে। এমতাবস্থায় পেশা গত কারণে রংপুর নগরীর কামাল কাছনাস্থ মুন ক্লিনিকে যাতায়াতের সময় সে হিন্দু পরিচয় গোপন রেখে নিজেকে শহিদুল ইসলাম বিপ্লব নামে মুসলমান পরিচয় দিয়ে ক্লিনিকের নার্স ও রংপুর নগরীর ৩৩নং ওয়ার্ড তামপাট পাঠান পাড়া গ্রামের আব্দুল মতিনের কন্যা রিনা বেগমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ও অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে গত ৫ বছর আগে তারা ১০ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে বিয়ে রেজিষ্ট্রার করেন। বিয়ের পর রিনার বাবা তার জামাতাকে নগত ১ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা, ১ টি মটর সাইকেল ও স্বর্ণালংকারসহ নানা উপঢৌকন দিয়ে কন্যা বিদায় করেন। এর পর থেকেই সপ্তাহে দুই এক দিন রিনা বেগম এর সাথে রাত্রী যাপন করেন কথিত শহিদুল ইসলাম বিপ্লব। সেখানে থাকা অবস্থায় সে নামাজ বন্দেগীসহ ইসলমী শরিয়তের সকল নিয়ম পালন করেন। এ ঘটনার কয়েক মাস পর ওই গৃহবধু রিনা বেগম স্বামীর সংসারে গিয়ে তার প্রকৃত পরিচয় জানতে পারে । এসময় রিনা বেগম তার হিন্দু স্বামীর বাড়িতে থাকতে চাইলে ওই লম্পট স্বামী বাড়ি থেকে রিনা বেগমকে এলোপাতারি মারধোর করে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। পরে নিরুপায় হয়ে রিনা বেগম নিজে বাদী হয়ে রংপুর কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অপদিকে, কথিত শহিদুল ইসলাম বিপ্লবের বিগত দিনের নানা কু-কর্ম বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ায় এলাকায় মুসলমানদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে রিনা বেগম এর সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে বলেন, আমাদের বিবাহ হওয়ার পাঁচ বছর হয়েছে। কিন্তু স্বামী শহিদুল ইসলাম বিপ্লব (ভানু শংকর) এর কথা মতো বিবাহের বিষয়টি প্রকাশ করিনি। তিনি বলেছিলেন, ১০ লক্ষ টাকা দেন মোহর বাবদ আমাকে ২ বিঘা জমি লিখে দিবে। কিন্তু এ পর্যন্ত কোন জমি আমার নামে লিখে দেয়নি। এমনকি স্ত্রীর অধিকার চাইতে গেলেও তিনি ও তার পরিবারের লোকজন আমাকে মারধর করেছেন। স্ত্রীর অধিকার আদায় করতে বাধ্য হয়ে আমি কোতয়ালী থানায় অভিযোগ করেছি। এ বিষয়ে মুন ক্লিনিক এর চেয়ারম্যান পার্থ বোসের সাথে কথা হলে তিনি এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে ছাওলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ মো: আব্দুল হাকিম এর সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তার বাড়ীতে স্ত্রী সুমী রায়সহ ১৪ বছর এর ছেলে রয়েছে । এ ব্যাপারে রংপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ জানিয়েছেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত চলচ্ছে। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।