বুধবার সকালে সর্বোচ্চ ৬১ কিলোমিটার বেগে সর্বোচ্চ ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে, এসময় ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কেটে গেছে তাপপ্রবাহও।
শরীরে জ্বালা ধরানো টানা গরমের পর ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টির সকাল ঢাকায় এনেছে স্বস্তি; আগামী তিন দিন এমন আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকালে সর্বোচ্চ ৬১ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। এ সময় ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কেটে গেছে তাপপ্রবাহ।
“আগামী তিন দিন এই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে, যার প্রভাবে রাজশাহী, নওগাঁ, মৌলভীবাজার, যশোর এবং কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে চলা মৃদু তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।“
রোজার ঈদের সময় কয়েকদিন বাদ দিয়ে রোজার মাসে এবং মে মাসের এই কদিনও তাপপ্রবাহের অসহনীয় গরমে হাঁসফাঁস করেছে মানুষ। পারদ কখনও ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই করেছে, কখনও বা ছাড়িয়েও গেছে।
এরপর গত ১৪ মে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ প্রভাবে ঢাকায় বাতাস বইলেও বৃষ্টি হয়নি ঢাকায়, ফলে গরমও কমেনি খুব একটা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে ঝড়ো হাওয়ার পর সামান্য বৃষ্টি হয়েছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ছিল বুধবার সকাল ৬টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের ছয় বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে। হয়েছেও তাই।
বুধবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকার আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে, শুরু হয় ঝড়ো হাওয়া। আধাঘণ্টার মধ্যে যাত্রাবাড়ী, ধানমণ্ডি, এলিফেন্ট রোড, মিরপুর, মহাখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় আকাশ ছেয়ে যায় কালো মেঘে।
অন্ধকার ঘনিয়ে আসায় এ সময় সড়কে অনেক গাড়িকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায়। মেঘের গর্জনের মধ্যে কিছুক্ষণ পরই নামে বৃষ্টি।
তবে একপশলা বৃষ্টি ঝরিয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আকাশ পরিষ্কার করে রোদও উঠে যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সকাল ৯টা দিকে টাঙ্গাইল, শেরপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর ও এর নিকটবর্তী এলাকায় দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হয়েছে।
নগারবাসীর এই ‘প্রার্থিত’ বৃষ্টিতে গরম কমলেও অফিসগামীরা কিছুটা ভোগান্তিরও শিকার হয়েছেন।
মিরপুর ১২ থেকে কাকরাইলগামী ব্যাংকার আহমেদ ইমতিয়াজ শাওন বলেন, “এমন বাতাস হলে গরম কমে। কিন্তু ঢাকায় সমস্যা ধুলা। বাতাস হলে একেবারে ধুলায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। কাল রাতে একটু বৃষ্টি হওয়াতে আজকে ধুলা উড়েছে কম। তবে বৃষ্টির জন্য বাস পেতে ভোগান্তি হয়েছে।”
মঙ্গলবার রাজশাহীতে দেশের সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ এবং নোয়াখালী অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর নৌ সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।