চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি॥
ওলিয়ে কামেল বুর্জুগ হযরত শাহ্ সুফী ভোলা শাহ্ (রহঃ) নামের সাথে যে“ভোলাহাট” নামের অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে, সেই ধর্ম প্রচারকের সমাধী সৌধটি অযতœ আর অবহেলার কারণে ভগ্নদশা অবস্থায় কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়ীয়ে আছে। ভঙ্গুর সমাধি সৌধটি সংস্কার করা না হলে ইতিহাসের সাক্ষী স্মৃতিটুকু নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইসলাম প্রচারক ওলিয়ে কামেল ভোলা শাহ্(রহঃ)এর ক্ষুদ্রাকৃতির সমাধি সৌধটি ভেঙ্গে গৌড়িয়া ইটগুলো ধসে পড়েছে। শাল কাঠের ছোট পাঠাতনটি আল্গা হয়ে পড়েছে। কোন রকমে ভগ্নদশা অবস্থায় স্মৃতিটুকু কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়ীয়ে আছে। সমাধিটি খসে পড়া ভগ্ন ইটগুলির মাঝে পীরের দোয়া কামনায় এলাকাবাসি টাকা-পয়সা দান এবং তার পাশে র্শিনি করেন। ফলে মহান সাধকের দো’আর বরকতে মানতকারী ব্যক্তিদের মনস্কামনা পূর্ণ হয় বলে স্থানীয়রা জানান। ভোলাহাট গ্রামে সরজমিনে গিয়ে ‘ভোলাহাট পাবলিক ক্লাব’ এর পশ্চিম দিকে জিন্নাত মাষ্টারের বাড়ীর সদর দরজার সামনে স্থাপিত সমাধি সৌধটির করুণ অবস্থা দেখা গেছে। কিংবদন্তি সূত্রে ইতিহাসে রয়েছে, গৌড়ের ধর্মভীরু আধ্যাত্মিক শাসক সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ্(১৪৯৩-১৫১৯খ্রিঃ) এর শাসনামলে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আগমন করেন ওলিয়ে কামেল বুজুর্গ হযরত শাহ্ ভোলা শাহ্(রহঃ)। তিনি সেখানে ইসলাম প্রচারের কেন্দ্র হিসাবে খান্কাহ্ (আস্তানা) স্থাপন করেন। ভোলাহাট থানা কার্যালয় হতে পূর্বগামী রাস্তার দো-মোহনীতে সাঠিয়ার বাজার ও পূর্ব-পশ্চিম মূখী রাস্তার মধ্যস্থলে খানকা ও মহান জ্ঞান-তাপসের মাযার অবস্থিত ছিল। বৃটিশ ঔপনিবেশিক কোম্পানীর শাসনামলে‘মেসার্স লুই পেইন এন্ড কোং’ এর রেশম কারখানায় বাণিজ্যিক প্রয়োজনে রাস্তা সৃজনকালে ঐ মহান সাধকের মাযার রাস্তা সৃজনে বাধাপ্রাপ্ত হলে বৃটিশ বেনিয়া কোম্পানীর লোকেরা স্থানীয় নিরুপায় মুসলমানদের শেষ অনুরোধে তাঁর(পীর সাহেব)দেহভস্ম সৃজনকৃত রাস্তার পাশে স্থানীয় মুসলমানদের দ্বারা পুন সমাধিস্থ করেন। পরবর্তীতে মুসলমানেরা পীর সাহেবের সমাধি স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে ক্ষুদ্র “সমাধি সৌধটি” নির্মাণ করেন। স্থাণীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান “ শেখজী অন্বীক্ষণ কেন্দ্র ভোলাহাট” এর নির্বাহী পরিচালক সাংবাদিক রবিউল ইসলাম জানান, মহান জ্ঞানতাপস হযরত ভোলা শাহ্ (রহঃ) এর নামের সাথে তাঁর খান্কাহ্ বা মাযারের নিকটস্থ‘হাট’(পণ্য ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্র) শব্দ যুক্ত হয়ে ঐ অঞ্চলের নাম‘ভোলারহাট; অতপর ‘ভোলাহাট’ হয়েছে। এই ভোলাহাট নামে একটি গ্রাম, মৌজা, থানা ও পরবর্তীতে ভোলাহাট উপজেলা নামকরণ হয়েছে। ভোলাহাটে নামকরণের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এ বিশাল স্মৃতি জরুরী ভিত্তিতে সংস্করণ ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী করেছেন ভোলাহাটবাসী।