হেমন্তের পরই আসে শীত। ফলে আবহাওয়ায় আসে পরিবর্তন। এই পরিবর্তনের সময় অনেকেই জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। অনেকে আবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
বেশির ভাগ মানুষই প্রথম দিকে ডেঙ্গু জ্বরকে ভাইরাল জ্বর ভেবে ভুল করে থাকেন। পরে দিন দিন অবস্থা খারাপ হতে থাকলে টেস্টে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। কিন্তু তত দিনে রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সাধারণ জ্বর ও ডেঙ্গুর পার্থক্য না জানার ফলে এমন অবস্থা হয়। যদিও সাধারণ জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গু জ্বরের খুব বেশি পার্থক্য নেই। যতটুকু পার্থক্য আছে তা জেনে রাখলেই সহজে শনাক্ত করা সম্ভব যে আপনি ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছেন।
ডেঙ্গু ও সাধারণ জ্বরের মধ্যে পার্থক্য
ডেঙ্গু হলে বিভিন্ন গাঁটসহ শরীরজুড়ে খুব ব্যথা হয়। এ কারণেই ডেঙ্গুকে হাড়ভাঙা জ্বরও বলা হয়। সঙ্গে ত্বকের বিভিন্ন অংশ লাল হয়ে জ্বালাপোড়া করতে পারে।
ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে সর্দি, গলা ব্যথা, শরীরে হালকা ব্যথা, দুর্বলতার মতো উপসর্গ থাকতে পারে।
তবে ডেঙ্গু রোগীদের জ্বরের তীব্রতা অনেক বেশি হয়। জ্বর আসার ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুরো শরীরে লাল লাল ফুসকুড়ি হতে থাকে। এর সঙ্গে গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণাও শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান উপসর্গগুলো চোখে পড়লেই সতর্ক হওয়া দরকার। জেনে নিন, কোন কোন লক্ষণ দেখা দিলেই সাবধান হবেন।
• জ্বর, মাথা ব্যথা।
• হাত-পায়ের সঙ্গে শরীরে ব্যথা।
• চোখের পেছনে ব্যথা।
• গাঁটে ব্যথা।
• বমি বমি ভাব ও অরুচি।
• ত্বকে ফুসকুড়ি, চুলকানি ও ডায়রিয়া।
• দাঁতের মাড়ি, নাক কিংবা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া।
• গলা ব্যথা ও ঢোক গিলতে কষ্ট।
• বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুর একটি মারাত্মক দিক হলো, ‘ম্যাক্রোফেজ অ্যাক্টিভেশন সিনড্রোম’। এক্ষেত্রে লিভারের উৎসেচক বেড়ে যায়। আবার এলডিএইচ ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বেড়ে যায়।
• একইভাবে রক্তে ফেরিটিনের মাত্রাও অনেক বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ‘সাইটোকাইন ঝড়’ তৈরি হয়। এমন ক্ষেত্রে রোগীকে স্টেরয়েড দিতে হয় বলে জানান চিকিৎসকরা। তাই কারো মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।