নির্ধারিত সময়েও শেষ হয়নি সুনামগঞ্জের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি সুনামগঞ্জের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ। ফলে ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন হাওরের কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছর জেলার প্রায় ১০ লাখ কৃষক দুই লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করেছেন। সেই ধান রক্ষার জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর প্রথমে ১২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ। কাজের সময়সীমা ধরা হয় চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি। অথচ আজ শেষ হয়নি বাঁধের কাজ। ১২ উপজেলার মধ্যে এখনো কোনো উপজেলায় শতভাগ হাওরের বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। অনেক জায়গায় ঘাস লাগানো ও বস্তা ফেলা কাজ বাকি রয়েছে। কাজের মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রাধানগর গ্রামের কৃষক সবুজ আলী। অনেক কষ্টে ২৫ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। তবে আজও বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি। বাঁধের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কৃষক সবুজ আলী বলেন, ‘যেভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে সামান্য পাহাড়ি ঢলেই বাধঁ ভেঙে ফসল ডুবে যাবে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, সুনামগঞ্জের হাওরে বেড়িবাঁধ আছে এক হাজার ৭১৮ কিলোমিটার। পাউবো বাঁধ নির্মাণের কাজ করে ৫৩টি হাওরে। এবার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৯৩ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও পূর্ণ সংস্কার করা হচ্ছে। এরইমধ্যে বাঁধ তৈরির ৮০ শতাংশ কাজ শেষে হয়েছে। বাকি কাজগুলো শেষ করার জন্য আরও এক সপ্তাহ সময় বাড়ানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজয় সেন রায় জাগো নিউজকে বলেন, কাজের মান অনেক নিম্ন। এ বছর কৃষকরা হাওরের ফসল ঘরে তুলতে পারবে কি না সন্দেহ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, মাটি সংকটের কারণে অনেক উপজেলায় কাজ ঠিক সময়ে শুরু করা যায়নি। যেহেতু সময় বাড়ানো হয়েছে, আশা করি কাজ দ্রুত শেষ করা যাবে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, নির্ধারিত সময়ে হাওরে বাঁধের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। দ্রুততম সময়ে বাঁধের কাজ শেষ করতে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।