গত ০৩/০৩/২০২৫ খ্রিঃ বিকাল ১৬.২০ ঘটিকায় ১৩৩ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং এর অভিযোগে সায়রকৃত মামলার প্রধান আসামী সাদিক এগ্রোর মালিক মোঃ ইমরান হোসেন (৪৩)-কে ঢাকার মালিবাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সহযোগিতায় চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ১৩৩ কোটি টাকার অধিক অর্থ মানিলন্ডারিং অপরাধের মাধ্যমে অর্জন করেছেন মর্মে অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়।
উক্ত মানিলন্ডারিং অপরাধে জড়িত থাকার প্রেক্ষিতে সাদিক এগ্রোর মালিক মোঃ ইমরান হোসেনসহ সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানা, ডিএমপি-তে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নংঃ ০৭, তারিখ-০৩/০৩/২০২৫ খ্রিঃ। ধারা- মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এর ধারা ৪(২)/৪(8)
অভিযুক্ত মোঃ ইমরান হোসেন (৪৩), তৌহিদুল আলম জেনিথ (৪৫) ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক এগ্রো লিমিটেড সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের মাধমে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি ও সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বিদেশে প্রায় ৮৬,০০,০০০ (ছিয়াশি লক্ষ) টাকা পাচার করেছেন।
উক্ত সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে থাইল্যান্ড ও মায়ানমার হতে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয় এবং ভুটান ও নেপাল হতে চোরাচালানের মাধ্যমে ছোট আকৃতির ভুটি গরু বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয় করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু ছাগলকে বিদেশী ও বংশীয় গরু/ছাগল বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে তা কোরবানির পশুর হাটে বিত্রনয় করে অবৈধভাবে আয় করে প্রায় ১২১,৩২.১৫.১৪৪.০০ (একশত একুশ কোটি বত্রিশ লক্ষ পনের হাজার একশত চুয়াল্লিশ) টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রুপান্তর করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী কাস্টমস হাউজ, ঢাকা কর্তৃক আটককৃত এবং কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার, সাভার, ঢাকার হেফাজতে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জবাই করে ন্যায্য মূল্যে মাংস বিক্রয়ের কথা থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজ-পত্রে সেগুলো জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে গরুগুলো কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন।
মোঃ ইমরান হোসেনসহ অন্যান্য সহযোগীরা বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জিত মোট ১১,৩৬,৯১,২০০ (এগার কোটি ছত্রিশ লক্ষ একানব্বই হাজার দুইশত) টাকা মোঃ ইমরান হোসেন (৪৩) তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেড এর নামে এফডিআর খুলে বিনিয়োগ করে লন্ডারকৃত সম্পদে রুপান্তর করেছেন।
এছাড়া মোহাম্মদপুর থানা, ঢাকার বেড়িবাধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারী খাল ভরাট ও জবর দখল করে সাদিক এগ্রোর মালিক মোঃ ইমরান হোসেন তার অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
অভিযুক্ত (১) মোঃ ইমরান হোসেন, পিতা- মোঃ উসমান আলী, চেয়ারম্যান, সাদিক এগ্রো লিমিটেড, (২) তৌহিদুল আলম জেনিথ (৪৫), পিতা- তারিকুল আলম চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সাদিক এগ্রো লিমিটেড, (৩) অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক এগ্রো লিমিটেড (Sadeeq Agro Ltd.)-সহ অজ্ঞাতনামা ৫-৭ জন সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩৩,৫৫,০৬,৩৪৪/- (একশত তেত্রিশ কোটি পঞ্চান্ন লক্ষ ছয় হাজার তিনশত চুয়াল্লিশ) টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রুপান্তর করায় অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ জোনাঈদ হোসেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন: যার মামলা নংঃ ০৭, তারিখ- ০৩/০৩/২০২৫ খ্রিঃ ধারা- মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) এর ধারা ৪(২)/৪(৪)।
গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ ইমরান হোসেনকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।