• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

দেলদুয়ারে প্রতিবেশীদের হামলায় মহিলাসহ আহত ৬ ॥ বাড়ি জবরদখলের হুমকি

আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

আ: রশিদ তালুকদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নে প্রতিবেশীদের হামলায় আতোয়ার রহমানের পরিবারের তিন গৃহবধূ সহ ছয়জন আহত হয়েছে। গ্রাম্য সালিশ বয়কট করে আতোয়ার রহমানের বাড়ি জবরদখল করার হুমকি দিয়েছে প্রতিবেশিরা। আহতরা হচ্ছেন, মৃত আ. ওয়াহেদ আলীর স্ত্রী ছালেহা বেগম, ছেলে আতোয়ার রহমান, মৃত জহের আলীর ছেলে মো. ইউনুস আলী, তার স্ত্রী সাহেলা বেগম, আতোয়ার রহমানের স্ত্রী ফজিলা বেগম, ছেলে মমিনুল ইসলাম রবিন। আহতদের টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের হেরন্ডপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের সাথে একই গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে মো. জাকির হোসেনদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ওই বিরোধের জের ধরে সম্প্রতি আতোয়ার রহমানের প্রতিবেশী মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. ইলিয়াস ও তার পরিবারের লোকদের ফুসলিয়ে মো. জাকির হোসেন তার দল ভারি করে। এক পর্যায়ে আতোয়ার রহমানের পরিবারের বাড়ি জবরদখল করে ভোগদখল করতে প্রতিবেশীদের প্ররোচিত করে। এর সূত্র ধরে গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রতিবেশী মো. ইলিয়াস(৩৮)-এর নেতৃত্বে মো. আরিফ(২৮), ইয়াকুব আলী(২৭), আতোয়ার আলী ওরফে আতাবর(২৮), ছানোয়ার হোসেন(৪০), ছাদেক হোসেন(৪১), বদু মিয়া(৩৪), ওয়াদুদ মিয়া ওদু(৪৭), ওয়াজেদ আলী(৫০), বাদশা মিয়া(৪০) ও সবুজ(২০) সহ ৫-৬ জন অপরিচিত ব্যক্তি লাঠি, দা, শাবল, লোহার রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আতোয়ার রহমানের বাড়িতে হামলা করে। বাধা দিতে গেলে প্রতিবেশী ও অপরিচিত সন্ত্রাসীরা গৃহবধূ ছালেহা বেগম, সাহেলা বেগম, ফজিলা বেগম, আতোয়ার রহমান, মমিনুল ইসলাম ও মো ইউনুসকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এ সময় মোবাইলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে চার হামলাকারীকে পুলিশ আটক করে। অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং রোববার(১৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গ্রাম্য সালিশে বিষয়টির মিমাংসার উদ্যোগ নেয়া হয়। পুলিশ আটককৃতদের স্থানীয় মাতব্বর আ. মান্নানের জিম্মায় ছেড়ে দেয়। কিন্তু অভিযুক্ত প্রতিবেশীরা ও জাকির হোসেন রোববার সালিশে উপস্থিত না হয়ে আতোয়ার রহমানের বাড়ি-ঘর জবরদখল করে তাদেরকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেয়। আতোয়ার রহমান বলেন, অভিযুক্ত প্রতিবেশীদেরকে আমাদের ভূমিতে বসবাস করার সুযোগ দিয়েছিলাম। তারা যে লোভী হয়ে ওঠেছে তা বুঝতে পারিনি। এ রকম একটা ঘটনা তারা ঘটাতে পারে তা আমরা কল্পনাও করতে পারি নাই। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ বিষয়ে আমরা মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছি। অভিযুক্ত প্রতিবেশী মো. ইলিয়াস জানান, ঘটনাটির সাথে আমরা জড়িত নই, তৃতীয় পক্ষের কেউ এটা ঘাটিয়ে থাকতে পারে। তবে, ওই ঘটনার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে আগামি বুধবার সালিশের দিন ধার্য করা হয়েছে। লাউহাটি ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া জানান, অভিযুক্ত প্রতিবেশী মো. ইলিয়াস ও তার আত্মীয়রা স্থানীয় পর্যায়ে খারাপ প্রকৃতির লোক। রোববার(১৮ ফেব্রুয়ারি) সালিশের দিন ধার্য থাকলেও তারা হাজির হননি। বরং আতোয়ার রহমানের পরিবারকে হুমকি দিয়েছেন বলে শুনেছি। রোববার বিকালে তাদেরকে পরিষদে ডেকে এনে আগামি বুধবার(২১ ফেব্রুয়ারি) সালিশের নয়া তারিখ দিতে চাইলেও তারা রাজি হয়নি। দেলদুয়ার থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়। পরে ঘটনাটি মিমাংসা করার প্রতিশ্রুতিতে স্থানীয় মাতব্বর আ. মান্নানের জিম্মায় আটককৃতদের রেখে এসেছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ