• শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন

সরকার কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত তানোরে খাস পুকুর-জলাশয় বেদখল ?

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, ২০১৮

তানোর প্রতিনিধি॥
রাজশাহীর তানোরের ৭টি ইউনিয়নের (ইউপি) বিস্তীর্ণ এলাকায় অবস্থিত সিংহভাগ খাস পুকুর ও জলাশয় রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে থাকায় এগুলো সাধারণ মানুষের কোনো কাজে আসছে না। অথচ এসব পুকুর-জলাশয় দখলমুক্ত করে সমাজের হতদরিদ্র ভূমিহীন ও প্রকৃত মৎস্যজীবীদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত অথবা বৈধভাবে লীজ দেয়া হলে সরকারের প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আয় হবে। অন্যদিকে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের পথ তৈরী ও উপজেলার আমিষের চাহিদা পুরুন করেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাছ সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। তানোর উপজেলা পরিষদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, বিগত ২০০৯ সালের দিকে সরকারের নীতিমালা মোতাবেক উপজেলার খাস পুকুর-জলাশয়গুলো তিন বছর আগে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মধ্যে ইজারা দেওয়ার পক্রিয়া শুরু হয়। কিšত্ত বাধাইড় ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান (তৎকালীন) আবুল কালাম আজাদ ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারের খাস পুকুর ও জলাশয় ইজারা পক্রিয়া বাতিলের জন্য উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উচ্চ আদালত পুকুর-জলাশয়গুলোর ইজারা কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। এরপর থেকে সরকারি এসব পুকুর-জলাশয়গুলোর ইজারা দেয়ার পক্রিয়া থেকে থমকে যায়।  সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, তানোরে প্রায় সাড়ে ৯শ’ সরকারি খাস পুকুর-জলাশয় ও প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১৫টি খাড়ি রয়েছে।
জানা গেছে, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এসব পুকুর-জলাশয়গুলো তিন বছর মেয়াদে রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাবশালীদের নিকট লীজ (ইজারা) প্রদান করেন। অথচ নিয়ম হলো-জনস্বার্থে ব্যবহৃত পুকুর-জলাশয় বাণিজ্যক উদ্দেশ্যে লীজ (ইজারা) দেয়া যাবে না। কিšত্ত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানগণ পুকুর-জলাশয়গুলো রক্ষণাবেক্ষনের নামে নিজেদের অনুসারীদের কাছে সাত টাকা শতক হারে ইজারা দিয়ে পরে আবার তারা নিজেরাই সেই পুকুর-জলাশয়গুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এখনো ভোগদখল করায় এগুলো এলাকার সাধারণ মানুষের কোন কাজে আসছে না। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণ তাদের অনুগত ও আতœীয়-স্বজনদের নামে সাত টাকা শতক হারে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তিন বছরের জন্য ইজারা দিয়ে পুকুর-জলাশয়গুলো নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাধাইড় ইউপির হাপানিয়া এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দীন আলী প্রায় কোটি টাকা মূল্যর ৭টি সরকারি খাস পুকুর অবৈধভাবে দখলে নিয়ে মাছ চাষ করছেন। এছাড়াও (সাবেক) ইউপি সদস্য মোসলেম আলী নিজে ৫টি পুকুর অবৈধভাবে দখলের পাশপাশি বহিরাগতদের কাছে  ইজারা দিয়ে  লাথ লাথ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এলাকাবাসি এসব পুকুর-জলাশয় উদ্ধার ও প্রকৃত ভূমিহীন মৎস্যজীবীদের মাঝে বৈধভাবে ইজারা দেয়ার দাবি করেছে। এতে একদিকে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে অন্যদিকে বেকার ও হতদরিদ্র ভূমিহীনদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাঃ শওকাত আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও মুঠোফোনে কল গ্রহণ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ