তানোর ‘রাজশাহী’ প্রতিনিধ॥
রাজশাহীর তানোরে নীতিমালা লঙ্ঘন করে চার ফসলি জমিতে অবৈধ ইট ভাটা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। তানোর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে বাধাইড় ইউপির প্রত্যন্ত পল্লী গোয়ালপাড়া গ্রামে চার ফসলি জমিতে পদ্মা নামের এই ইট ভাটা নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে লোকালয় ও ফসলি জমিতে  ইট ভাটা নির্মাণের ফলে আশপাশের জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর বিরুপ প্রভাব পড়েছে। জ্বালানী হিসেবে কয়লার পরিবর্তে প্রকাশ্যে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে কাঠের কালো ধোয়ায় লোকালয়ের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এছাড়াও ইট তৈরীতে উর্বরা কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সুন্দরপুর ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম আলু চাষের কথা বলে গোয়ালপাড়া মাঠে প্রথমে চার বিঘা চার ফসলি জমি কিনেছেন, পরবর্তীতে আরো প্রায় কুড়ি বিঘা জমি ইজারা নিয়ে প্রায় ত্রিশ বিঘা জমির ওপর অবৈধ পদ্মা ইটভাটা নির্মাণ করেছেন। স্থানীয়রা ইটভাটা নির্মাণে বাধা দিলে তাদের মামলা-হামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে রফিকুল ইসলাম এই অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের জারি করা পরিপত্র (২০ অক্টোবর ২০০৩) অনুযায়ী ইট ভাটায় ১২০ ফুট উঁচু চিমনি স্থাপন বাধ্যতামুলক। অথচ অবৈধ পদ্মা ইট ভাটায় মাত্র ৩০ ফুট উচু মানধাত্তা আমলের টিনের দুটি চিমনি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (৪ ধারার ৫ উপ-ধারা) অনুযায়ী আবাসিক এলাকা, উপজেলা সদর ও ফল বাগানের আশপাশের ৩ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ অবৈধ। কিšত্ত লোকালয় ও চারফসলী জমিতে পদ্মা ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ইটভাটার নির্গত ধোঁয়া অতি সহজেই লোকালয় ও খেত-খামারে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ জনজীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। এ ছাড়াও ইটভাটায় শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইটভাটায় এসব শিশু শ্রমিকরা কাজ করছেন। স্থানীয়রা  অবৈধ পদ্মা ইট ভাটা বন্ধের জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যম প্রশাসনের অভিযান পরিচালনার দাবি করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি   হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাঃ শওকাত আলী বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি জমিতে ইটভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নাই। এব্যাপারে পদ্মা ইটভাটার মালিক ও ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সময় স্বল্পতার কারণে তিনি ইট ভাটা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। তবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সকল কাগজপত্র সংগ্রহ হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।