• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
উত্তর কোরিয়াকে সৈন্যের বিনিময়ে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে রাশিয়া! তাপমাত্রা নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া নিয়ে যা অফিস রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে হবে: নুর ফ্যাসিবাদ কিভাবে হটাতে হয় বাংলাদেশের জনগণ দেখিয়ে দিয়েছে: পিনাকী ইমরান খানের স্ত্রীর অভিযোগ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে, ভিন্ন কথা দলের মোহামেডানকে হারিয়ে শিরোপা জিতলো বসুন্ধরা কিংস ঘুষ প্রদানের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে আদানির বিরুদ্ধে পরোয়ানা, লাভ হবে বাংলাদেশের আমরাও একটি ব্যবসায়ী পার্টনার চাই ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস,  লেবানন থেকে ৮২ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন ঢাবিতে বিএনপির মহাসচিব- জামায়াত আমির ও আইন উপদেষ্টাকে জাতীয় ঘোষণা

বন্যার পানি নামতেই ফের স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে তিন দফা বন্যায় উপজেলার চুকাইবাড়ী, চিকাজানী, বাহাদুরাবাদ, হাতিভাঙা, চরআমখাওয়া ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। শেষ দফা বন্যার পানি দ্রুত নেমে গেলেও রাস্তাঘাটের পাশাপাশি ২৮৭ হেক্টর জমির রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। তবে বন্যার পানি নামতেই ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আবারো ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলার ৩৫ হাজারের অধিক কৃষক ৯ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করেন। এর মধ্যে ৪৭৪ হেক্টর জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়। দ্রুত পানি নেমে গেলেও ২৮৭ হেক্টর জমির রোপা আমন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ৫ হাজার ১৫০ জন কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন। সর্বমোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৫৮৪ টাকা।

তবে বন্যায় রোপা আমনের ক্ষতি হলেও শেষ সময়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। বীজতলা থেকে আমনের বীজ সংগ্রহ করে আবারও রোপা আমনের চারা লাগাচ্ছেন তারা। এতে ফলন কম হলেও ক্ষতির একটা বিরাট অংশ উঠে আসবে বলে আশা তাদের। তবে অর্থের অভাব ও বীজ সংকটে অনেকে চারা লাগাতে পারছেন না বলেও জানা গেছে।

চরহাতিভাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মালেক নামে এক কৃষক বলেন, তিন বিঘা জমিতে রোপা আমনের চাষ করেছিলেন তিনি। এতে ব্যয় হয়েছিল ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু বন্যায় সেই আমন সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তাই ক্ষতি পুষিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে সময় লাগবে তার। কিন্তু বীজ সংকটের কারণে পুনরায় চারা লাগাতে পারছেন না তিনি। তার মতো এ অঞ্চলের অনেক কৃষকের ফসল বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের সবার একই অবস্থা।

লংকারচর গ্রামের আলমাছ আলী বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে রোপা আমনের চাষ করেছিলেন তিনি। কিন্তু বন্যায় তলিয়ে যাওয়ায় তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পানি নেমে গেলে আবারো ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে চড়া দামে বীজ কিনে দেড় বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছেন।

পোল্যাকান্দি নামাপাড়া গ্রামের মো. রেজুয়ান মিয়া বলেন, বন্যা হবে না ভেবে আড়াই বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছিলেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। তবে আর্থিক সংকট ও বীজ না পাওয়ায় পুনরায় আর রোপা আমন লাগাতে পারছেন না।

খোলাবাড়ি এলাকার আব্দুর রশিদ বলেন, আমরা কৃষকরা কৃষির ওপর নির্ভশীল। চাষাবাদ করে সংসার চলে। বন্যার পানিতে জমির রোপা আমন পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে আবারও বেশি দামে আমনের বীজ কিনে ক্ষেতে রোপণ করছি। কৃষি অফিস থেকে এখনও কোনো সহায়তা পাইনি।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আলমগীর আজাদ জানান, এই বন্যায় কৃষকের ২৮৭ হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অধিক। তার মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চুকাইবাড়ী ইউনিয়নে। ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কৃষকরা বীজ কিনে পুনরায় আমন চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে সবসময় সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

জামালপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা  বলেন, জেলায় রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমি। উজানের পাহাড়ি ঢলে ১০ হাজার ১৮০ হেক্টর জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মাঝে ৪ হাজার ১২১ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আবারও রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করছেন। কৃষি বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থেকে প্রতিনিয়ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ