• শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন

চীনা বন্দর রক্ষা করতে মরিয়া হামলা মিয়ানমার বাহিনী,

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩
ছবি : সংগৃহীত

চীনের মধ্যস্থতার যুদ্ধবিরতি-সংক্রান্ত বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পরেই সশস্ত্র বিদ্রোহী তিন গোষ্ঠীর জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বুধবার রাখাইন প্রদেশের রামরি দ্বীপে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর আস্তানায় বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে মিয়ানমার বিমানবাহিনী। পাশাপাশি, ওই দ্বীপে মিয়ানমার নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ গোলাবর্ষণ করেছে বলেও সরকারি সূত্রের জানা গেছে।

উল্লেখ্য, বাঘ এবং কুমিরসহ নানা বন্যপ্রাণীতে ভরা ওই দ্বীপের উপকূলে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ার জন্য চীনের সাথে চুক্তি হয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের। তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী- ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ সে দেশের সামরিক জান্ত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত অটল থাকায় চলতি সপ্তাহেই চীনের মধ্যস্থতায় আয়োজিত শান্তি বৈঠক ভণ্ডুল হয়ে গিয়েছিল।

নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মিয়ানমার সেনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী জোটের শুরু করা অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’। ওই অভিযানের জেরে ইতিমধ্যেই সে দেশের প্রায় অর্ধেক বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে। উত্তর, পশ্চিম এবং উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারের শান, চিন আর সাগিয়াং প্রদেশ রয়েছে এই তালিকায়। তিন সংগঠনের জোটের পাশাপাশি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)-ও শামিল হয়েছে জান্তাবিরোধী যুদ্ধে।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী শক্তির স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’, জান্তা বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। গৃহযুদ্ধের জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ (যার মধ্যে কয়েক হাজার আশ্রয় নিয়েছেন উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মিজোরামে)। এই পরিস্থিতিতে ডিসেম্বরের গোড়ায় চীনা পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র কয়েক জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যুদ্ধবিরতির জন্য সক্রিয় হয়েছিলেন। মিয়ানমারের সরকারি টিভি চ্যানেল ‘গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমার’-এ সে কথা জানিয়েছিলেন, সামরিক জান্তা সরকারের মুখপাত্র জমিন তুন।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেইজিংয়ের সেই উদ্যোগ বিফল হয়েছে বলে সোমবার আমেরিকাস্থিত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস (ইউএসআইপি) জানায়। তাদের রিপোর্ট বলছে, ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়ান্স’ এবং আরো দু’টি সশস্ত্র গোষ্ঠী মিলে জান্ত সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালাতে ‘ব্রিগেড ৬১১’ নামে একটি বাহিনী গঠন করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জনজাতিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ওই বাহিনী। তারাই এই মুহূর্তে রয়েছে লড়াইয়ের প্রথম সারিতে। রাখাইনের রামরি দ্বীপ ‘সামরিক অবস্থানগত দিক’ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, সেখানে বন্দর তৈরি করলে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেইজিংয়ের ‘প্রভাব’ আরো বাড়বে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ