নির্ধারিত সময়ের ৯০ সেকেন্ড বা দেড় মিনিট আগেই ভর্তি পরীক্ষা শেষ করায় দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু শিক্ষার্থী সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করছে। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মামলায় শিক্ষার্থীরা এ সমস্যার কারণে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণও দাবি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা এ ভুলের কারণে আগামী এক বছর পুনরায় প্রস্তুতি গ্রহণ ও এ বাবদ তাদের খরচ মেটাতে মাথাপিছু ২ কোটি দক্ষিণ কোরিয়ান মুদ্রা বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
প্রসঙ্গত, সারা বিশ্বজুড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা বেশ পরিচিত। কারণ এক টানা ৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে, এক সাথে অনেকগুলো বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। আর এই পরীক্ষাকে বিশ্বের কঠিনতম পরীক্ষার একটি হিসবে বিবেচনা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় এ পরীক্ষার মাধ্যমে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি বা চাকরি পাওয়াই নির্ধারণ হয় না, বরং এ পরীক্ষা একজন শিক্ষার্থীর সারা জীবনের সাথেও জড়িত। এ পরীক্ষা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, পরীক্ষা চলাকালীন ওই স্থান দিয়ে বিমান চলাচল এবং শেয়ার বাজারের কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়া হয়। দিনটি পুরো দেশের জন্যই এতটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এ উপলক্ষে পুরো দেশজুড়ে পিনপতন নীরবতা তৈরি করা হয়।
অন্তত ৩৯ জন শিক্ষার্থীর মঙ্গলবার তাদের দায়ের করা মামলায় জানায়, রাজধানী সিউলের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রের ঘড়িতে সঠিক সময়ের আগেই ঘণ্টা বাজতে শুরু করে। কিছু শিক্ষার্থী সাথে সাথেই এ বিষয়ে অভিযোগ করলেও দ্বায়িত্বরত শিক্ষক তাদের কথার কর্ণপাত না করে খাতা নিয়ে যায়।
পরে অবশ্য শিক্ষকরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির আগে অতিরিক্ত দেড় মিনিট সময় বাড়িয়ে দেন। কিন্তু ওই সময় সঠিক ভাবে ব্যবহার করা শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
স্থানীয় ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মনযোগ নষ্ট হওয়ায় পরবর্তীতে অনেক শিক্ষার্থী আর পরীক্ষায় মনোনিবেশ করতে পারে নি। ফলে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই তারা চলে যায়।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই ঘণ্টা বেজে যাওয়ার ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ায় এটিই প্রথম নয়। গেল এপ্রিলে সিউলের একটি আদালতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে ৫ হাজার ২৫০ ডলার সমপরিমাণ অর্থ পেয়েছিলেন।