কালের পরিক্রমায় সবারই বয়স বাড়ে। আর বয়সের প্রতিফলন দেখা যায় আমাদের চোখে ও মুখে। ত্বক কুঁচকে যায়। ঝুলে যায় গালের চামড়া। মুখে ভিড় বাড়ে বলিরেখার। ৩০ বছরের পর থেকেই ত্বকে এ পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে। মূলত ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদন কমলেই এসব সমস্যা দেখা দেয়। ত্বকের এমন দশা মেনে নিতে পারেন না অনেক নারীই। এর কারণে বাড়ে স্ট্রেস ও উদ্বেগ।
সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অধিকাংশ নারীই ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়েন। ত্বকের এ সমস্যা নিয়ে আমরা বিষদ আলোচনায় আসি। সম্প্রতি দুই হাজার জন আমেরিকান নারীর ওপরে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। এ সমীক্ষা চালিয়েছে নিওস্ট্রাটার তরফে টকার রিসার্চ।
এতে দেখা গেছে, অর্ধেকের বেশি নারী ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত। জেনারেশনের ভিত্তিতে সেসব নারীকে ভাগ করে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। বুড়িয়ে যাওয়া নিয়ে মিলেনিয়ালসরা অনেক বেশি উদ্বিগ্ন বলেই উঠে এসেছে এ সমীক্ষায়। সে ক্ষেত্রে জেনএক্স এবং বেবি বুমারসা এই নিয়ে বেশি চিন্তিতই নন। এদিকে দেখা গেছে, জেন জেড এবং মিলেনিয়ালরা বয়সের তুলনায় নিজেদের বেশি বয়স্ক দেখায় বলে মনে করেন। জেন জেডের ১৮ শতাংশেরই মনে হয়, অন্যান্য জেনারেশনের তুলনায় তাদের অনেকটাই বয়স্ক দেখায়।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় অর্ধেক নারীই ৪০ বছরের মধ্যে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার নানা লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কপালে রিঙ্কেলস এবং মুখে বলিরেখা দেখতে পেয়েছেন তারা। এর পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপ এবং গলায় ভাজও দেখা গেছে।
ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকিয়ে দিতে ওই দুই হাজার জনের প্রায় ৭০ শতাংশ নারীই স্কিনকেয়ার রুটিনে জোর দেন বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ৬৪ শতাংশ নারী এক থেকে চারটি বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন।
ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে অনেকেই হাতিয়ার করেছেন স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টকেই। তবে এই স্কিনকেয়ার কিন্তু কেবল মুখেই আটকে নেই। অনেকেই মুখের পাশাপাশি ঘাড়, হাত ও চোখের চারপাশের ত্বকের দিকেও নজর দিয়েছেন। তবে সেই সংখ্যাটা নগণ্য। কারণ ৪০ শতাংশেরও কম নারীমুখ ছাড়া অন্যান্য জায়গার ত্বকের পরিচর্যায় নির্দিষ্ট স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করছেন। যেমন কেবল ১৭ শতাংশ নারীই ঘাড়ের দিকে নজর দেন। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশেরও কম নারী ঘাড়ের জন্য নিয়মিত কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করেন।
অনেকেই মনে করেন ত্বকের যথাযথ নিলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। সে কারণেই অধিকাংশ নারী ৩৫ বছরের পর থেকেই স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যান্টি-এজিং প্রোডাক্ট যোগ করেন। আর তা দিয়ে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করেন। তবে অনেকেই কিন্তু ত্বকের বিষয়ে সচেতন নন। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, কেবল ৩২ শতাংশ নারীই যথাযথভাবে ঘাড়ের ত্বকের যত্ন নিতে জানেন।
এই দিকে ত্বকের স্বাস্থ্যে বেশ কিছু বদভ্যাস থেকেও দূরে থাকতে হয়। সেই সম্পর্কে সচেতন পাঁচজনের মধ্যে তিনজন নারী। তবে নারীরা এখনো স্ট্রেস, ধূমপান, অনিদ্রা এবং সানস্ক্রিন না ব্যবহার করার মতো বদভ্যাসের পিছু ছাড়াতে পারেননি। এই কারণগুলোর জন্যও কিন্তু ত্বকের বয়স বাড়ছে।