ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। তবে শুরুতেই এ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অভিবাসী বহনকারী একটি মার্কিন সামরিক বিমানকে নামার অনুমতি দেয়নি মেক্সিকো। যুক্তরাষ্ট্রের মুখের ওপর না করে দিয়েছে দেশটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার (২৫ জানুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।
শুক্রবার গুয়েতেমালায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর তিনটি ফ্লাইট অবতরণ করে। প্রতিটি ফ্লাইটে প্রায় ৮০ জন করে অভিবাসী ছিল। মেক্সিকো নিয়েও একই ধরনের পরিকল্পনা ছিল ট্রাম্পের। এজন্য সেখানে একটি সি-১৭ পরিবহন বিমান অবতরণের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু মেক্সিকো তাতে সায় দেয়নি। শেষ পর্যন্ত মেক্সিকো নামতেই পারেনি মার্কিন সামরিক বিমান।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন রিমেইন ইন মেক্সিকো কর্মসূচি পুনরায় চালুর ঘোষণা দেয়। ওই কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চাওয়া অ-মেক্সিকান আশ্রয়প্রার্থীদের মামলা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের মেক্সিকোতেই থাকতে বাধ্য করা হয়। এ নিয়ে বুধবারই কড়া প্রতিক্রিয়া দেখায় মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাউম। অবশ্য এ নিয়ে মুখ খোলেনি মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা দপ্তর।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেন ট্রাম্প। সেদিনই মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত এলাকাজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি। এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত দেড় হাজার সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। কর্মকর্তারা বলছেন, সামনেই আরও হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হতে পারে। এতে আরও উত্তেজনা বাড়বে দুই দেশের মধ্যে।
এর বাইরেও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। অবশ্য সরাসরি সংঘাত এড়াতে চাইছেন শিনবাউম। এজন্য আলোচনার প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এভাবে গণহারে মেক্সিকোর অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোরও বিরোধিতা করেছেন শিনবাউম। তার ভাষায়, ওই অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এক দেশ থেকে অন্য দেশে ব্যক্তিদের সরিয়ে নিতে এর আগে সামরিক বিমান ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অতিসম্প্রতি ২০২১ সালে আফগানিস্তানে এমন ঘটনা চোখে পড়েছিল।
একজন মার্কিন কর্মকর্তার ভাষায, অভিবাসীদের সামরিক প্লেনে চড়িয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটাই প্রথম। তথ্য বলছে, টেক্সাস ও ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫ হাজারের বেশি অভিবাসী আটক রয়েছে। তাদের ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র।