• সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন

কিশোরগঞ্জ হাওরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবোঃ এ্যাড. ফজলুর রহমান

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

এ জেড আল মুজাহিদ, কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা:-  আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রাখলে কিশোরগঞ্জের হাওরে আনন্দ মোহন বসুর স্মৃতি রক্ষায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার আপ্রাণ চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

গত শনিবার (৮ জানুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের “জয়সিদ্ধি উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী” অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়সিদ্ধি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন।

এ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান আরো বলেন, আমার সৌভাগ্য আমার প্রতিষ্ঠিত স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের উদ্ভোধক হতে পেরেছি। জীবনে কখনো নাটক করিনি। শুধুমাত্র এ হাওরে একটি উচ্চ বিদ্যালয় করার জন্য নাটকের পরিচালক হয়েছি। সে নাটকে অভিনয় করেছেন আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়েরা। নাটকের খরচবাদে আয় হয়েছিল তৎকালীন সময়ে পঁচিশ হাজার টাকা। এ হাওর এলাকায় স্কুল হওয়ার আগে মুসলমানের কোন মেয়ে এসএসসি পাস ছিলনা। স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখন ঘরে ঘরে ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষক, প্রশাসক। আমার এ হাওরের বুকে আজ আলো ছড়াচ্ছে ।

১৯৭৪ সালে এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ সবাইকে নিয়ে জয়সিদ্ধি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি। নাটক, যাত্রাপালা করে মাত্র ২৫ হাজার টাকার ফান্ড নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। বিনা বেতনে শিক্ষকদের বাড়িতে বাড়িতে লজিংয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তিল তিল করে গড়া এই স্কুল এখন ৫০ বছরের অতিক্রম করছে। আমাদের এলাকায় একজন কৃতি সন্তান রয়েছে যার নাম ‘আনন্দ মোহন বসু’ ওনাকে স্মরণ রেখে এই হাওর অঞ্চলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করব। আমাদের এলাকার সন্তানরা আর শহরে গিয়ে পড়াশোনা করতে হবে না উল্টো বিভিন্ন দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা হাওর অঞ্চলে পড়াশোনার জন্য আসবে।

তিনি আরও বলেন, এ হাওর অঞ্চলের একজন ডেপুটি স্পিকার ছিলেন, রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি চাইলে অনেক উন্নয়ন করতে পারতেন কিন্তু তিনি দুইটা কাজ ছাড়া আর কিছু করেননি। তিনি হাওরে একটা ৩০ কি. মি. বাঁধ তৈরি করেছেন যা ১১টা ইউনিয়নের মাথার ওপর দিয়ে গেছে। তার ফলে আগামী ২০ বছর পর হাওরে আর ধান হবে না হবে শুধু ভুট্টা।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সভাপতিত্বে ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জন্তয়ী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ফেরদৌস হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী, সিনিয়র আইনজীবী ফজলুর রহমানের সহধর্মীনি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম (রেখা), ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ রোকন রেজা, ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু বকর সিদ্দিক, ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস.এম কামাল হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর (স্বপন), সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনির উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান, জয়সিদ্ধি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকসহ জয়সিদ্ধি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকরা, প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধারা, প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

এ সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিণত হয় এক মহা মিলন মেলার। বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের আজ একত্রিত হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। জীবন জীবিকার তাগিদে অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন। স্কুলের এ সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে আজ সবাই একসাথে একত্রিত হতে পেরে খুই খুশি।

জয়সিদ্ধি উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীর এ মিলন মেলা শনিবার সকালে শুরু হয়ে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মধ্যরাতে শেষ হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ