বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধর ঘটনার পর গাজীপুর মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ধীরাশ্রম ও দাক্ষিণখান গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। গাজীপুরসহ সারাদেশে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর খবরে ওই এলাকায় বয়স্ক নারীরা ছাড়া অন্য নারীরাও বাড়িঘর ত্যাগ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ির সোনালী রঙের প্রধান ফটকটি বন্ধ রয়েছে। ফটকের সামনে কাঁচ ভাঙা টুকরা ও কয়েকটি সম্মাননা স্মারক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য লাঠিসোটা, জুতা ও জামাকাপড় পড়ে আছে। রাস্তাটি দিয়ে লোকজনের চলাফেরা নেই বললেই চলে। আশপাশের এলাকার অনেকেই ভিন্ন পথ দিয়ে চলাচল করছেন।
আশপাশের বাড়িঘরগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়িতে কোনো পুরুষ লোক নেই। শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্তৃক বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর সবাই পালিয়ে গেছে। কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কেবল বয়স্ক নারীরা বাড়িতে। পুরুষ লোকগুলো তাদের স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। সবার মাঝে একটি ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ির সামনের মসজিদটিও তালাবদ্ধ। আশপাশের পরিবেশ নীরব ও নিস্তব্ধ। ধীরাশ্রম—টঙ্গী সড়কের দুই পাশে ঘটনাস্থলের কাছে সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বলেন, রাতের বেলা ছাত্রদের নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। কেউ এগিয়ে গিয়ে ছাত্রদের রক্ষা করতে গেলে তাদেরও নাজেহাল হতে হয়েছে। ছাত্ররা আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর করতে যায়নি। তারা ভাংচুর ও লুটপাট ঠেকাতে গিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন একজোট হয়ে ছাত্রদের বেধড়ক পিটিয়েছে। আহত ছাত্রদের হাসপাতালে নিতে গেলেও তারা বাধা দেয়। আর অভিযানের কথা শুনে বাড়ি ছেড়ে সবাই পালিয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী ও হামলার ঘটনায় ৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ৩৫ জন ও জেলা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৪০ জনকে।