নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের ৭৮১ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুদকের সহকারী পরিচালক শাহজাহান মিরাজ সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপের পাশাপাশি অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ এবং এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠভাজন হিসেবেও তিনি পরিচিত।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নজরুলের মোট সম্পদ পাওয়া গেছে ৮৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৮১ কোটি টাকা সম্পদের বৈধ কোনো আয় পাওয়া যায়নি। তাই দুদক আইনের ১৯৪৭ সালের ৫ এর ২ ধারায় মামলা করে দুদক।
জানা গেছে, নজরুলের স্ত্রী এবং সন্তানদের নামেও সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক। প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো ব্যাংক খাতের উদ্যোক্তাদের অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান। নজরুল ইসলাম মজুমদারও ওই সময় থেকে আর প্রকাশ্যে আসেননি। খবর রটেছিল তিনি বিদেশে চলে গেছেন। ক্ষমতার পালাবদলে ব্যাংক খাতে পরিবর্তনের অংশ হিসেবে গত ২৯ আগস্ট এক্সিম ব্যাংকে তাকে বাদ দিয়ে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বিএবির নেতৃত্বও হারান তিনি। এর মাধ্যমে ১৭ বছর পর নজরুল ইসলামের বলয় থেকে বের হল শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকটির পর্ষদ।
ব্যাংক খাতের আলোচিত নাম নজরুল ইসলাম ২০০৭ সাল থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। বিএবি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময় বেসরকারি ব্যাংক থেকে চাঁদা তুলে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা নিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। ব্যাংক থেকে নানা সময় চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে উদ্যোক্তাদের সুবিধা বাড়ানো ও নীতি পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার অভিযোগও রয়েছে।
শেখ হাসিনার পতনের কয়েক দিন আগেও ব্যবসায়ীদের নিয়ে সম্মেলন করে যেকোনো পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে শেখ হাসিনার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নজরুল ইসলাম মজুমদার। স্বৈরাচারী সরকারের অন্যতম দোসর হিসেবে মনে করা হয় তাকে।