সম্প্রতি বাংলাদেশের ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পলায়ন নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর। রীতিমতো তিনি বোমা ফাটিয়েছেন হাসিনার ব্যাপারে। ভারতীয় প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল সে সম্পর্কে ভারত নাকি আগেই অবগত ছিল। তবে এ ব্যাপারে ভারত সেসময় হাসিনাকে পরামর্শ দেওয়া ছাড়া কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেনি বলেও জানান তিনি। এবার এই বিষয়েই মুখ খুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডাঃ জাহেদ উর রহমান। তার মতে ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চাকরি থাকাই উচিৎ নয়।
তার মতে এস জয়শংকর যেভাবে কথা বলেছেন বাংলাদেশের বিষয়ে এটি শুধুমাত্র নিজেদের পিঠ বাঁচানোর জন্য এর সাথে তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (জয়শংকর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে কিছু রেটরিক্যাল কথাবার্তা বলা ছাড়া যার মধ্যে কোনভাবেই স্পষ্ট জিওপলিটিক্যাল এবং ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস এর বেসিক জানেন এমন কোন আভাস দেখি না। কিন্তু কিছু কথা বলেন শুনতে খুব মনে হয় ভারত বিরাট সুপার পাওয়ার হয়ে গেছে। তাই এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে তার চাকরিই থাকা উচিৎ নয়।
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন হাসিনার ওপর তাদের প্রভাব ছিলো না কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি বলেন, ‘ভারত মনে করতো তারা বাংলাদেশে যে পরিমাণ নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে তার প্রেজেন্স বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে নিশ্চিত করতে পেরেছে তাদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থার এবং বাংলাদেশেরও বেশ কিছু দালাল পুলিশ মিলিটারির মধ্যে, এতে তাদের বিশ্বাস ছিল এই তীব্র ক্ষোভ ঘৃণার পরও শেখ হাসিনাকে তারা ক্ষমতায় রাখতে পারবে।
হাসিনা তাদের কথা শুনতো না এমন হাস্যকর মন্তব্যর পিছনেও যুক্তি দেন এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তাদের কথা শুনতো না এটা একেবারে মিথ্যা কথা। আমি একটা উদাহরণ দেই শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন পার হওয়ার পর খুব স্বাভাবিক ছিল তিনি চায়নায় যাবেন আগে ভারতে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু ভারতের নির্বাচন নিয়ে তখন ব্যস্ততা ছিলো, তাই তিনি তার ওটা ঝুলিয়ে রেখে আগে ভারতে গেলেন মানে তার কিবলায় তিনি আগে যাবেন তার জন্য চায়না সফর ঝুলিয়ে রাখলেন চায়না বলছিল তখন যে তুমি এটা করে যাও পরে ভারতে যেও কিন্তু না উনাকে যেতে হবে নরেন্দ্র মোদির পা চাটতে হবে কথাটা খুব বাজে শোনালেও কিন্তু এটাই করেছেন উনি, সরাসরি গিয়ে পা চেটে আসতে হবে এবং মোদির ব্রিফিং নিতে হবে চায়নায় কি করা যাবে কি করা যাবে না।
আমরা খেয়াল করব উনি ওখানে গিয়ে তারপর ফিরে আসার পর ইনফ্যাক্ট চায়না পরবর্তীতে ক্ষুব্ধ হলো এই কারণে তিস্তা প্রকল্প ভারত করবে বললেন এমনকি মংলা পোর্ট যেটা পরিচালনার জন্য চায়না খুব সিরিয়াসলি চেষ্টা করেছে এবং চায়নার সাথে প্রাথমিক সমঝোতাও হয়েছে সেটা থেকেও সরকার সরে আসে।
এসময় ডাঃ জাহেদ উর রহমান ভারতের ষড়যন্ত্র থেকে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদেরও সংকট আছে এই ধরনের একটা সরকার আসলে যার অন্তত সাইজে বেশ বড় অর্থনীতিতে বড় মিলিটারি পাওয়ারে বড় সে অন্তত রিজিয়নে একটা মেজর অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। মেজর অস্থিরতার কারণ হতে পারে সেটা ভারতের বর্তমান সরকার আমাদেরকে খুব ক্লিয়ারলি বুঝিয়ে দিচ্ছে আমরা আমাদেরও জায়গা থেকে আমরা আমাদের অবস্থানটাকে ঠিক রেখে চলছি কিন্তু কিছু ঝড়ঝাপটা আমাদেরও উপরে আসবে আসার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকাই দরকার।’