• সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
দেশে প্রবাসী আয় এলো ২০৪৪৭ কোটি টাকা ২৫ দিনে অভিযান পরিচালনাকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকের ওপর হামলা বাধ্যতামূলক করতে ড্রোনের নিবন্ধন, বাতিল হচ্ছে আগের নীতিমালা নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে: আমীর খসরু চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান ছাড়েননি ইবতেদায়ি শিক্ষকরা বিএনপির সঙ্গে ছাত্রনেতাদের ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় চিত্রনায়িকা পরীকে গ্রেফতার করতে আদালতের র্নিদেশ বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী চায় ইউরোপ, প্রশিক্ষণে টাকা দেবে ইইউ জুলাই-আগস্টে কারাগার থেকে পালানো ৭০০ বন্দিকে এখনো ধরা যায়নি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় পুতুলের দায়িত্ব পালন দেশের জন্য মর্যাদাহানিকর: দুদক

এমসি কলেজে অগ্নিসংযোগে ১০ ছাত্রলীগে নেতা আদালতে হাজির

আপডেটঃ : রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

সিলেট অফিস

সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাস পোড়ানোর ঘটনায় ছাত্রলীগ-১০ ও শিবিরে ১৯ নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি।
আদালতে হাজির হলেন ছাত্রলীগের ১০ নেতা কর্মী

রোববার সকালে উচ্চ আদালতের নিদেশ অনুযায়ী অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির হন তারা ।
উক্ত মামলার আসামী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু জানান ,উচ্চ আদালত থেকে ছাত্রলীগের ১০ নেতা কর্ম আগাম জামিন নিয়েছিলাম রোববার সকালে উচ্চ আদালতের নিদেশ অনুযায়ী অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির হয়েছি ,আগামী তারিখ পরবতী পড়ে জানা যাবে।

সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের অতিরিক্ত পিপি মাহফুজুর রহমান জানান, ২২ নভেম্বর বুধবার বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম উম্মে সারাবন তহুরা আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।পরোয়ানাগুলো সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয় বলে জানান মাহফুজুর।

প্রসঙ্গত ,২০১২ সালের ৮ জুলাই ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের জেরে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাস। আগুণ দেওয়ার ঘটনার ভিডিওচিত্রে ছাত্রলীগ কর্মীদের দেখা গেলেও পুলিশের তদন্তে উঠে আসেনি তাদের নাম। পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইয়ের তদন্তের পর বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

ছাত্রলীগ ও ছাত্র শিবিরের বিরোধের কারণে এই নাশকতা চালানো হয়েছে বলেও বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।

তদন্তের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ছাত্রাবাস পোড়ানোর মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের জবানবন্দি ফের গ্রহণ করা হয়। ফলে সাক্ষীদের মৌখিক সাক্ষ্য, ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র, জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এটাই প্রমাণিত হয় যে, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছাত্রলীগ ও ছাত্র শিবিরের বিরোধের কারণেই সংঘটিত হয়েছে।

প্রথমত ছাত্রলীগের কর্মী উজ্জ্বল আহমদকে ছাত্র শিবিরের কর্মীরা গুরুতর জখম করায় তাৎক্ষণিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য বিচার বিশ্লেষণে এটা সুষ্পষ্টভাবে প্রমাণিত বলে পর্যালোচনায় বলা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ছাত্রাবাসে আগুন দিতে গ্যালনে করে পেট্রোল ব্যবহার করা হয়। পরে ছাত্রাবাস কক্ষ লুটপাটও হয়। এ ব্যাপারে এক সাক্ষী বলেছেন-‘ছাত্রাবাস যখন আগুনে পুড়ছিল, তখন রামদা উঁচিয়ে মিছিল করেছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ ছাত্রাবাসের ফটকের সামনে উপস্থিত থাকলেও নীরব ছিল। পরে ছাত্রলীগের একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশও হয় ছাত্রাবাস ফটকে’।

তদন্তে যে ২৯ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে তারা হলেন-সিলেট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও বর্তমানে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থ, আবু সরকার (বহিরাগত, শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।

আরও রয়েছেন মৃদুল কান্তি সরকার, কামরুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, বাবলা, মো. আতিকুর রহমান, লায়েক আহম্মেদ, সিদ্দিক আহম্মেদ ইউসুফ, জহিরুল ইসলাম, আক্তারুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, আসাদুজ্জামান শাহিন, মোহাম্মদ বিন মামুন বুলবুল, আউলাদ, আছরাফ আহমেদ শিপন, নজরুল ইসলাম, অলিউল্লাহ ওরফে ওলিউর রহমান, খুরশেদ আলম, বাছিদ ওরফে আবদুল বাছিদ, আবদুস সালাম, ইমতিয়াজ রফিক চৌধুরী, আবদুল্লাহ ফারুক, কয়েছ ওরফে কয়েছুজ্জামান তালুকদার, আবু রেহান, রুবেল ও জ্যোতির্ময় দাস সৌরভ।

ছাত্রাবাস পোড়ানোর ঘটনায় হল সুপার বশির আহমদ বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ২০১২ সালের ১৩ জুলাই মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আরও দুটি মামলা করা হয়।

আলোচিত এ মামলার রহস্য উদঘাটন করতে আদালতের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিলেটের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি)। এরপর সিআইডি ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে প্রথমবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তবে আদালত এ প্রতিবেদন গ্রহণ না করে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয়।

এরপর আবার তদন্ত করে সিআইডি ২০১৫ সালের ৯ অগাস্ট ফের আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনও আদালত গ্রহণ না করে পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মাধ্যমে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

সিআইডি দুই বার ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর তদন্তে অপরাধী শনাক্ত না হওয়ায় আলোচিত এ মামলার ভবিষৎ নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। সর্বশেষ এ মামলার জট খুলতে গত ৩১ মে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ দেন সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে সারাবন তহুরা।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এম এ ওয়াহাব জানান, আদালতের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এখনও পুলিশের হাতে পৌঁছেনি। পরোয়ানা হাতে পাওয়ামাত্র আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ