চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি॥
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বারঘোরিয়া বাজারে মুরগী ব্যবসায়ী মোঃ হাসনাত আলীর দোকান হতে মরা মুরগীর বিক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দোকানদার মহারাজপুর এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বারোঘরিয়া বাজারে মেসার্স হাসনাত পোল্ট্রি হাউসে মরা মুরগি বিক্রয়ের অভিযোগে দোকান ঘেরাও করে আছে। দোকানের সামনে প্রায় ২০ টি মরা মুরগি পড়ে আছে। দোকান মালিক মোঃ হাসনাত আলী পালিয়ে গেছে। দোকান পাহারায় আছে বারঘরিয়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশগণ।এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৫০ টি মরা মুরগি ছিল। ৩০ টির মত মরা মুরগি বিভিন্ন কৌশলে বিক্রয় করেছেন অভিযুক্ত দোকান মালিক হাসনাত।মরা মুরগি ক্রেতা লক্ষীপুর এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে মোঃ সিহাব আলী (১৭) বলেন, মুরগি বাড়িতে নিয়ে গেলে আমার মা সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন এটা মরা মুরগি। ফেরত দিতে এসে দেখি দোকান বন্ধ করে দোকানদার পলাতক।পরে সদর মডেল থানার পুলিশ গিয়ে মরা মুরগি আর হাসনাতের ব্যবহৃত মটর সাইকেল (এ্যাপাচি আরটিআর) টি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।অপর ক্রেতা বারঘরিয়া লক্ষীপুর এলাকার মৃত বেলাল উদ্দীন মন্ডলের ছেলে আবুল কালাম বলেন,মুরগি নিয়ে গিয়ে রান্নার প্রস্তুতিকালে লোকমুখে শুনলাম এটা মরা মুরগি। আমারও সন্দেহ হয় কারণ মুরগি কিনার সময় দোকানদার হাসনাত আমাকে আগের জবাই করা মুরগি দিয়েছে। তাই মুরগি ফেরত দিতে এসেছি।অপর মুরগি ক্রেতা লক্ষীপুর বাদুড়তলা এলাকার গোলাম জাকারিয়ার ছেলে সাগর (২০) বলেন, মুরগি কেনার সময় জবাই করা মুরগি দিলে আমার সন্দেহ হলে, দোকানদার বলেন, একজন ৫০ পিস মুরগির অর্ডার ছিল কিন্তু মুরগি জবাই করার পর সে মুরগি নিবেনা জানালে আপনাদের নিকট এই মুরগিগুলো বিক্রয় করছি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে বারঘরিয়া দোকানদার বলেন, মরা মুরগির অভিযোগ পেয়ে সদর উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মোসাঃ তাজকেরাতুন নেসা মরা মুরগি সহ হাতে-নাতে হাসনাতকে ধরে ফেলে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তিনি কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ না করে তাকে ছেড়ে দিয়ে অফিসে চলে যান।এলাকাবাসী ও কয়েকজন শ্রমিক নেতার অভিযোগ, হাসনাত মুরগি ব্যবসার আড়ালে ফেন্সিডিল আর ইয়াবা ব্যবসা করে। বারঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য বলেন, সে অনেকদিন থেকে মাদক ব্যবসা আর মুরগির ব্যবসা করে। তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন ওই সদস্য।বারঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক এক সদস্য বলেন, জামাত পরিবারের সদস্য হাসনাত দরিদ্র ঘরের সন্তান হলেও এসব করে হাসনাত আজ কোটিপতি। সারা জেলাব্যাপী তার নেটওয়ার্ক কাজ করে। সম্প্রতি হাসনাত মহারাজপুর গোয়ালটুলি এলাকায় একটি আলিশান বাড়ি করেছে। রাজশাহীর উপশহরে তার একটি প্লট আছে। তাছাড়া তার ফিডের ডিলারশিপ আছে। আছে তিনটি পিকআপ। এই তিনটি পিকআপের মাধ্যমে সে জেলাব্যাপি মুরগি আর ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে।এই ব্যাপারে অভিযুক্ত হাসনাতের মোবাইলে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মনজুর রহমান বলেন, একটি জিডি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।