• বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সিরিয়ার অন্তবর্তী প্রেসিডেন্টের আঙ্কারায় বৈঠক বাংলাদেশ ব্যাংকে যে কোনো সময় অভিযান, খালাস পেলেন শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাজাপাপ্ত সব আসামি গাজাবসীকে ‘অন্য কোথাও’ সরিয়ে উপত্যকা দখল করবে যুক্তরাষ্ট্র মেসি, ম্যারেডোনা কিংবা পেলে নন, তিনি নিজেই সর্বকালের সেরা বাড়তি সুবিধা সহ মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে বাংলাদেশি শ্রমিক নেওয়ার সুখবর কোটা বহালের দাবিতে জাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা তক্ষীরায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত পিটিআই নেতার মুক্তিতে মার্কিন চাপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিল পাকিস্তান তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন ৫০ লাখ নতুন ভোটার

রাস্তায় পড়ে আছে বিআরটিসির কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ২৫টি বাস

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮

রংপুর অফিস॥
রংপুর নগরীর দর্শনা-টার্মিনাল এর মাঝে আরকে রোডের দুই পাশে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) বেশ কিছু অকোজো বাস। বাসগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকায় ইতোমধ্যে সেগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ চুরি গেছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন থেকে রাস্তায় পড়ে থাকা বাসগুলো মেরামত বা স্থানান্তরের কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এতে ক্রমেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ২৫ টি বাস।
সরেজমিনে দেখা যায়, আরকে রোডের নতুন ট্রাক স্ট্যান্ডের পার্শ¦বর্তী বিআরটিসির ভাড়া ডিপো সংলগ্ন রাস্তায় প্রায় ২৫ টি বাস সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বাসগুলোতে মরীচিকা ধরেছে। বেশ কটি বাসের কাঠামো ছাড়া আর কোন যন্ত্রাংশ অবশিষ্ট নেই। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫-৭ বছর থেকে এভাবেই পড়ে আছে বাসগুলো। বিভিন্ন সময় বাসগুলোর মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। তারা জানান, রাত নয়টার দিকে বিআরটিসি কাউন্টার বন্ধ হওয়ার পর বাসগুলো দেখার আর কেউ থাকে না।   এতে, সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময় এগুলোর যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে গেছে অনেকেই। এক্ষেত্রে বিআরটিসি’র কর্মচারীদেরও হাত রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বাসের যন্ত্রাংশ চুরি যাওয়ায় বাসগুলো এখন একেবারেই অকেজো বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিসি’র এক কর্মচারী।
তিনি জানান, বিআরটিসিতে চাকুরী পাবার পর থেকেই তিনি ওই বাসগুলোকে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখছেন। বিগত সময়ে এগুলো মেরামত বা স্থানান্তরে তেমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি। তাঁর দাবি, উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের সুনজর না থাকায় বাসগুলো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের সরকারী সম্পদ। এতে লোকসান গুনতে হবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশন (বিআরটিসি) কে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি বিআরটিসি’র রংপুর ডিপোতে কর্মরত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, উদ্যোগ নিলেই বাসগুলো মেরামত করা সম্ভব হতো। কিন্তু তা না করে শুধুমাত্র জায়গা সঙ্কুলোন হচ্ছে না এমন অজুহাতে বাসগুলো অরক্ষিত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে। এতে বিআরটিসির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পকেট ভারী হয়েছে বলে জানান তিনি। রাস্তার পাশাপাশি বিআরটিসির রংপুর ডিপোতেও বেশ কয়েকটি বাস অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অধিকাংশ বাসের বিভিন্ন অংশ খুলে রাখা হয়েছে ডিপো চত্বরে।
এদিকে, হাইওয়ের দুই পাশে প্রায় স্থায়ীভাবে বিআরটিসি’র বাস ফেলে রাখায় রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে ওই স্থানে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা-চালকরা। ইজিবাইক চালক রাশেদ জানান, আরকে রোডটি একটি ব্যস্তময় সড়ক। এই সড়কে বড় যানবাহনগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। বিআরটিসি স্ট্যান্ডের পার্শবর্তী সড়কে বড় পরিবহনগুলোকে যায়গা দিতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। বাসগুলো রাস্তার উপর রাখায় ওই স্থানে চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত যায়গা পায়না ছোট পরিবহনগুলো।
এদিকে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ অরক্ষিত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখার বিষয়টি কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অনেকেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, বিআরটিসি একটি লুটপাটের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এখানে জবাবদিহীতার কোন জায়গা নেই। যে যেভাবে পাচ্ছে জনগণের তথা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করছে। বাসগুলো এভাবে ফেলে রেখে শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে না, এর মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তিও বাড়ানো হয়েছে। অতিদ্রুত বাসগুলো মেরামত করা না হলে কয়েকদিন পর সেগুলো সমূলেই চুরি হয়ে যেতে পারে বলে শংকা প্রকাশ করেন তিনি।
বিভাগীয় লেখক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জাকির আহমদ জানান, বাংলাদেশে চলাচলের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবহণ সংকট পরিলক্ষিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে সামান্য অজুহাতে এতগুলো বাস অকেজো করে ফেলে রাখার কোন অর্থ হয়না। জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে বাসগুলো মেরামত করে গণমানুষের সেবা বৃদ্ধি করা দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি বিআরটিসি রংপুর ডিপোর ম্যানেজার জামশেদ আলী। তিনি এ বিষয়ে মূল কার্যালয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। এ বিষয়ে জানতে বিআরটিসি’র ঢাকা কার্যালয়ের পরিচালক হামিদুর রহমান (যুগ্ম সচিব) এর টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ