ধামরাই(ঢাকা) প্রতিনিধি॥
ঢাকার ধামরাইয়ে এসএসসি পরীক্ষায় একই গ্রামের ২১পরীক্ষার্থীসহ বেলীশ্বর মোহিনী মোহন উচ্চবিদ্যালয়ের অর্ধেকের বেশী পরীক্ষার্থী ফেল করেছে।এসব পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার শর্তে মোটা অংকের টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ কয়েকজন শিক্ষকের কাছ থেকে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মোট পরীক্ষা দেয় ২৮৬জন পরীক্ষার্থী। উত্তীর্ণ হয় মাত্র ১২১জন পরীক্ষার্থী। অকৃতকার্য হয়১৬৫জন পরীক্ষার্থী।ব্যবসা শিক্ষা বিভাগে পাশ করে ৩৮জন ও ফেল করে ৫৩জন পরীক্ষার্থী। মানবিক বিভাগে থেকে পাশ করেছে ৪০জন ও ফেল করেছে ১৪১জন পরীক্ষার্থী।বিজ্ঞান বিভাগে পাশ করেছে ৪৩জন ও ফেল করেছে ১২জন পরীক্ষার্থী।
মোহিনী মোহন উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ও গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামের বাসিন্দা মোঃ রাশেদুল ইসলাম,মোঃ মহসিন হোসেন,মোঃ সোহান হোসেন,মোঃ শাকিল হোসেন,মোঃ নুর আলম,মোঃ আলহাজ্ব হোসেন,মোঃ ঠান্ডু মিয়া,বিথী আক্তার,বিলকিস আক্তার,সোমা আক্তার,সুবর্ণা আক্তার ও রুচি আক্তার সহ একই গ্রামের ২১ জন পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় প্রদান শিক্ষক মোঃ আলী হোসেন ও সহকারি শিক্ষক মোঃ সেলিম হোসেনের দুর্ণীতির চিত্র প্রকাশ হয়ে গেছে। অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছে,নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার শর্তে মোটা অংকের টাকা কড়ি হাতিয়ে নিয়ে ওইসব শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষার ফর্ম পূরণের সুয়োগ দিয়েছেন ওই দুই শিক্ষক। এতে তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উটেছে অভিভাবকরা।
অরপদিকে ধামরাই পৌর শহরের শতবছরের পুরনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ডিঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় এ্যান্ড কলেজ ধরে রাখতে পারেনি শ্রেষ্ঠত্ব স্থান। প্রতিবছরই এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধামরাই উপজেলা তথা ঢাকা জেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে থাকে। এবছর এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শতভাগ পাশের গৌরব অর্জন করতে পারেনি।এবারের ফলাফলে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯৩.৫৪ভাগ পাশ করায় শতভাগ পাশের গৌরব থেকে ছিটকে পড়েছে। এ জন্য অভিযোগের তীর এখন প্রধান শিক্ষকের দিকে। ৩৫৭জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৩৩৩জন পরীক্ষার্থী। ফেল করেছে ২৩জন ও অনুপস্থিত একজন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করার শর্তে এ ২৩জন পরীক্ষার্থীই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হযরত আলী প্রতিজনের কাছ থেকে প্রতিমাসে পনেরশ’করে টাকা নিয়ে প্রাইভেট পড়াত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,মোট পরীক্ষা দেয় ৩৫৭জন পরীক্ষার্থী। উত্তীর্ণ হয় ৩৩৩জন পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে সাধারণ বিভাগে এ প্লাস পেয়েছে ৭৩জন ও কারিগড়ি বিভাগে এপ্লাস পেয়েছে ৬জন পরীক্ষার্থী,এ পেয়েছে ১৭৮জন পরীক্ষার্থী, মাইনাস-এ ৬৭জন পরীক্ষার্থী,বি গ্রেড পেয়েছে ১৪জন পরীক্ষার্থী ও সি-গ্রেড পেয়েছে ১জন পরীক্ষার্থী। বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দেয় ২০৫জন পরীক্ষার্থী। পাশ করে ২০৪জন ও ফেল করে ১জন পরীক্ষার্থী।মানবিক বিভাগে পরীক্ষা দেয় ৩৮জন পরীক্ষার্থী। উত্তীর্ণ হয় হয় ২৯জন ও ফেল করে ৯জন পরীক্ষার্থী।ব্যবসা শিক্ষায় পরীক্ষা দেয় ১১৩জন পরীক্ষার্থ। পাশ করে ৯৯জন,ফেল করে ১৩ জন ও একজন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। এ ফল বিপর্যয়ের জন্য পরীক্ষার্থীদের অভিভাবক,পরীক্ষার্থী ও সহকারি শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষককেই দায়ী ও অভিযুক্ত করেছেন বলে জানাগেছে।
তারা বলেছেন,একজন বিএসসি শিক্ষক, কি করে স্কুল এ্যান্ড কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়। তার যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তিনি একাই সহকারি প্রধান শিক্ষক,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ তিনটি পদ একই দখল করে রেখেছেন। তিনি নির্বাচনী পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়ে শিক্ষকদের সহজ গার্ড দিতে বাধ্য করে। ফলে অমেধাবী শিক্ষার্থীরাও এসএসসি পরীক্ষার ফর্ম পূরণের সুযোগ পায়। আর তিনি ২৪জন পরীক্ষাার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করানোর শর্তে প্রাইভেট পড়ানোর নামে না পড়িয়েই প্রতিজন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে পনেরশ’ করে টাকা হাতিয়ে নেন।সকলেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান প্রধান মোঃ হযরত আলী বিএসসি’র বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।
এব্যাপারে বেলীশ্বর মোহিনী মোহন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার বিরু;েদ্ধ আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,পাশ ফেল ছাত্র’র জন্যই। এবার ফেল করেছে আবার তারা পাশ করবে। এনিয়ে লেখালেখিরতো কিছুই দেখছিনা। আসলে সাংবাদিকরা নেগেটিভ কোন বিষয় পেলে তারা বেশী রকম বাড়াবাড়ি করে।
এব্যাপারে হার্ডিঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হযরত আলী তাকে নির্দোষ দাবি করে বলেন,তিনটি পদে আমি জোর করে আসিনি। কর্তৃপক্ষ রেখেছেন । এছাড়া যোগ্যতার কথা বলবেন, ম্যানেজিং কমিটিস যোগ্য মনে করেছে বলেই তো তারা তিনটি পদে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রাইভেট সবাই পড়ায় আমিও কয়েকজনকে পড়িয়েছি। পাশ যারা করেছে তাদেরকে অন্যান্য শিক্ষক আর যারা ফেল করেছে তাদেরকে আমি প্রাইভেট পড়িয়েছি এ কেমন কথা।যত দুষ নন্দঘোষ এ হতে পারেনা।