সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি॥
জামালপুুরের সরিষাবাড়ীতে বোরো ধানে ব্লাষ্টার রোগে আক্রান্ত হয়েছে। লোকসানের মুখে পড়েছে চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, কৃষকদের কয়েকটি জাতের ধান চাষে নির উৎসাহিত করা হচ্ছে ব্লাষ্টার ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য।
উপজেলা কৃষি অফিস ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এ বছর বোরো মওসুমে উপজেলার প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে লাগানো ধান ব্লাষ্টার রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বোরো ২৮ জাতের ধানে ছত্রাক জনিত কারনে এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই রোগে ক্ষেতে ধানে চাল ভর হওয়ার আগেই গাছ শুকিয়ে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা আক্রান্ত ধান কেটে পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করছেন। যার ফলে তাদের গুনতে হচ্ছে লোকসানের হিসেব।
উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ১৯ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হচ্ছে। যা লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ করা হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এই বছর ধানের ফলন ভালো। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে ধানে ব্লাষ্টার ভাইরাস দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করে দিনের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়ে যাওয়ায় রাতেও আবহাওয়া প্রতিকূল থাকার কারণে সহজেই বোরো ধান ছত্রাক জনিত এ ব্লাষ্ট ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ব্লাষ্টার ভাইরাসটি ধানের কান্ডে আক্রমন করে। ফলে কান্ড কালচে হয়ে গাছ শুকিয়ে পঁচে পড়ে যায়। হেড ব্লাষ্টার ছত্রাক ধানের উপরের অংশ থেকে আক্রান্ত হতে শুরু করে। ধানের অংশ শুকিয়ে চিটা হয়ে যায়। দূর থেকে মনে হয় মাঠের ধান পেকে গেছে, যেন কয়েক দিন পর কাটা যাবে। কাছ থেকে দেখলে বোঝা যাচ্ছে ধান শুকিয়ে চিটা হয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ধানের মধ্য কোন চাল নেই, চিটা হয়ে যাওয়া আক্রান্ত ধান কেটে কৃষকরা পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করছেন কৃষক। জমিতে অন্য ফসল চাষের চিন্তাও করছেন অনেক কৃষক।
ডোয়াইল ইউনিয়নে মাজালিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, ধান ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হচ্ছে। ঔষধ ব্যবহার করে কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এ বছর অনেক লোকসান হবে চাল কিনে খেতে হবে আমাদের। সার, বীজ, কীটনাশক ধার দেনা করে ধানের চাষ করেছিলাম। কিন্তু রোগে ধান নষ্ট হওয়ায় আমরা ধার-দেনা কিভাবে পরিষোধ করব সেই চিন্তায় আছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মো: নুরুজ্জামান বলেন, কৃষকদের ব্লাষ্ট প্রতিরোধ আগে থেকেই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং এখনো এটি প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছি। এ বোরো মৌসুমে কৃষকদের কয়েকটি জাতের ধান চাষে নিষেধ করা হচ্ছে। বোরো ২৮ জাতের ধানে বেশি ছত্রাকজনিত ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে।