টাঙ্গাইল প্রতিনিধি॥
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার সরকারি মুজিব কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিতালী অপহৃত হওয়ার দীর্ঘ পাঁচ মাসেও উদ্ধার হয়নি। উপরন্তু অভিযুক্তরা জামিনে মুক্তি পেয়ে মামলার বাদিকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
জানাগেছে, সখীপুর পৌরসভার প্রবাসী মিলন মিয়ার মেয়ে মিতালী সরকারি মুজিব কলেজে যাওয়া-আসার পথে টাঙ্গাইল শহরের থানাপাড়ার আমিনুল ইসলামের ছেলে মো. খাইরুল বাসার(২২) উত্যক্ত করত। এক পর্যায়ে মো. খাইরুল বাসার কলেজ ছাত্রী মিতালীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে কলেজে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে মো. খাইরুল বাসার ও তার অজ্ঞাতনামা ৪-৫জন সহযোগী মিতালীকে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে মিতালীর মা জাহানারা বেগম সখীপুর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে তা গ্রহন না করে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করার পরামর্শ দেয়।
পরে গত ১৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা(নং-২৩/১৮ইং) দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেয়।
পিবিআই ঘটনার সত্যতা পেয়ে মো. খাইরুল বাসাররের বাবা মো. আতোয়ার রহমান ও অপর অভিযুক্ত আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। পরে উল্লেখিত আতোয়ার ও আমিনুল জামিনে মুক্তি পেয়ে গত ২৯ মার্চ জাহানারা বেগমের বাড়িতে গিয়ে ৭দিনের মধ্যে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে জাহানারা বেগম বাদি হয়ে সখীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি(নং-৮৫, তাং-০২/০৪/২০১৮ইং) দায়ের করেন।
মামলার বাদি জাহানারা বেগম জানান, মিতালীকে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর অপহরণ করার পর গত ৪ জানুয়ারি মোবাইল ফোনে মিতালী তাকে অপহরণ করার কথা জানায়। পরে গত ৬ জানুয়ারি মো. খাইরুল বাসার মোবাইল ফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তিনি আরো জানান, অপহরণকারীরা তার মেয়েকে দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবত অজ্ঞাতস্থানে আটকে রেখে নিয়মিত ধর্ষণ করছে অথচ পুলিশ তাকে উদ্ধারে কোন তৎপরতা দেখাচ্ছে না।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল থানার এসআই মো. নজরুল ইসলাম জানান, মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। অভিযুক্ত ও ভিকটিমকে উদ্ধারে নানা কৌশল ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করা যায়, দ্রুত ভিকটিমকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।