চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি॥
আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সোমবার রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে পড়েছে শতশতমণ আম। এতে আমচাষি, ব্যবসায়িরা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সোমবার রাত ৯ টা হতে পৌণে ১০টার দিকে বয়ে যাওয়া ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সে সাথে বেশ কিছু বাড়ী ঘর ল-ভ- করে দিয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে মোড়ে মোড়ে ১ থেকে ২ টাকা কেজি দরে বিভিন্ন জাতের আম ক্রয় করতে দেখা গেছে ফড়িয়াদের। ঝরে পড়া কুড়ানো আম বিক্রয় করতে বীরশ্বরপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান তিনি একাই ২শ মণ আম কুড়িয়েছেন। তিনি বলেন তার মত অনেকেই বিপুল পরিমাণ আম কুড়িয়েছেন। আমফাউন্ডেশন সংলগ্ন বমপুতা নামক স্থানে কুড়ানো আম ক্রয় ব্যবসায়ি টনিকের জানান, আমগুলো সব ঢাকায় চলে যাবে জুস কোম্পানীতে। তারা এ সব আম দিয়ে আচার তৈরী করবে বলে জানান। এদিকে আম ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন,সেলিম রেজা, লাল দেওয়ান, কুরবান আলীসহ আরো কয়েক জনের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রচ- ঝড়ে প্রায় ২৫ শতাংশ আম পড়ে গেছে। ফলে তাদের আসল বিনিয়োগ উঠানো নিয়ে চরম হতাশায় আছেন। অপরদিকে আম ফাউন্ডেশন ভোলাহাটের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক চুটু বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আমগাছ উপড়ে গেছে এবং প্রায় ৩০শতাংশ আমের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখেছি ২০শতাংশ আমের ক্ষতি হয়েছে। তবে এর পরিমাণ বাড়তে পারে বলে জানান। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বাড়ী-ঘর উড়িয়ে নিয়েছে ঝড়ে। বিভিন্ন স্থানে গাছও উপড়ে গেছে। এ সব ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত দুর্যোগ বিভাগ কোনো তথ্য দিতে পারিনি। এদিকে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়ায় প্রায় ১৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ ছিলো। ফলে জনদুর্ভোগে পড়তে হয় মানুষকে। জেলার সদর উপজেলার গোবরাতলা, মহিপুর ও সর্জন এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ব্যাপক আম ঝরে পড়েছে। গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসজাদুর রহমান মান্নু মিঞা বলেন-উল্লিখিত এলাকায় অন্তত ২৫ ভাগ আম ঝরে পড়েছে। তবে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেছেন কোনো কোনো স্থানে ঝড়ে সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তবে তা উল্লেখযোগ্য নয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা জানান, সোমবার রাতে ঝড় শিবগঞ্জ, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর ও নাচোল উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যায়। এই ঝড়ে এ ৪ উপজেলার ৬ হাজার হেক্টর আম বাগান ঝড়ের কবলে পড়ে। এতে ১ থেকে প্রায় ২০ শতাংশ আম ঝড়ে পড়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।