• বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন

‘মামলার পর খালেদা জিয়াকে পরামর্শ না দিয়ে এখন অনেক কথাই বলছেন’

আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৯ মে, ২০১৮

ঢাকার মানহানির দুটি মামলায় জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনের ওপর মঙ্গলবার হাইকোর্টে শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য রেখেছে আদালত। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করে দেন।
শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, দুটি মামলায় জামিন চেয়েছি। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিন না দিয়ে নথিভুক্ত করে রেখেছে। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, পত্রিকায় দেখলাম নড়াইলের একটি মানহানির মামলায় আপনারা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে না গিয়ে সরাসরি হাইকোর্টে এসেছেন। এ কারনে আবেদনটি ‘নট প্রেস রিজেক্ট’ হয়েছে। এই দুটি মানহানির মামলায় তো আপনারা জেলা জজ আদালতে না গিয়ে হাইকোর্টে এসেছেন।
খন্দকার মাহবুব বলেন, আপিল বিভাগের রায় আছে বিশেষ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে হাইকোর্ট জামিন দিতে পারে। আর এখানে বিশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে জামিন আবেদন নিষ্পত্তি না করে দীর্ঘ সময় দিয়ে নথিভুক্ত করে রাখা হচ্ছে।
আদালত প্রশ্ন করে বলেন, এসব মামলায় কি আবেদনকারীকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে? যদি না করে থাকে তাহলে কেন জামিন চাচ্ছেন?
খন্দকার মাহবুব বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। আর এজাহারে নাম থাকায় জামিন চেয়েছি।
মামলার অভিযোগ তুলে ধরে আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমলে নিয়ে সমন ইস্যু করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিচারিক ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। দন্ডবিধিতে মানহানির সংজ্ঞা দেওয়া আছে। কেউ আবেদন নিয়ে বলবে মানহানি হয়েছে আর অমনিতেই কোর্ট সমন ইস্যু করবে এটা ঠিক নয়। বিচারিক ক্ষমতার অপব্যবহার যাতে কেউ না করতে পারে সেদিকে উচ্চ আদালতের দৃষ্টি দেয়া দরকার, সেটা করার সুযোগ আপনাদের রয়েছে।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, যখন এ ধরনের মামলা হয়েছে এবং নিম্ন আদালত সমন ইস্যু করেছে তখনই ওই আদেশের বিরুদ্ধে সংক্ষুদ্ধ হয়ে আবেদন করার সুযোগ তো আপনাদের ছিলো। কেন করেননি? আপনারা যারা মামলা করেন তারাও তো জামিন আবেদনকারীকে সেই পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ ছিলো। কিন্তু তা না করে এখন অনেক কথাই বলছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমদ বলেন, যথাসময়ে সমন জারি হয়েছে। সমন ইস্যুর পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। আবার এরা কোর্টে গিয়েও জামিন চায়নি।
তিনি বলেন, নড়াইলের মামলায় জামিন আবেদন ‘নট প্রেস রিজেক্ট’ হয়েছে। ওই মামলা এবং ঢাকার দুটি মানহানির মামলা একই ধরনের। এ মামলায় তারা সেশন কোর্টে (জেলা জজ আদালত) না গিয়ে সরাসরি হাইকোর্টে জামিন চেয়েছেন। ফলে জামিন আবেদন গ্রহনের সুযোগ নেই।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করে দেয়। এ সময় খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মওদুদ আহমদ, সানাউল্লাহ মিয়া, এম আমিনুল ইসলাম, কায়সার কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং ১৫ আগষ্ট জন্মদিন পালনের অভিযোগে করা দুই মানহানির মামলায় খালেদা জিয়া হাইকোর্টে জামিন চান। এই দুটি মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ দিয়ে জামিন আবেদন নথিভুক্ত করে রাখে। এরপরই হাইকোর্টে জামিন চাওয়া হয়। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হওেয়ার পর থেকেই কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ