গুরুতর অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী এবং রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে চিকিৎসা না করিয়ে আবারো নারায়নগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
শিমুল বিশ্বাসের আইনজীবী এডভোকেট জয়নাল আবেদীন মেসবাহ, ব্যারিস্টার মীর হেলাল ও তার আত্মীয় সরদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আজ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে শিমুল বিশ্বাসকে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ইকো টেস্টে তার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে। কিন্তু কোন চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। কার্ডিওলজি বিভাগেও নিতে দেওয়া হয়নি।
চিকিৎসকরা জানান, শিমুল বিশ্বাসের প্রস্রাবে সমস্যা, ত্বকে সমস্যা, ডায়াবেটিস বেড়ে গেছে। দুই হাত-পা, চোখ ফুলে গেছে। প্রেসারও হাই।
শিমুল বিশ্বাসের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ডাক্তাররা তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। আলট্রাসনোগ্রাম, এমআরআইসহ ৫-৬ ধরনের টেস্ট দেন, টেস্ট করানোর জন্য তার আত্মীয় জাহাঙ্গীর টাকাও জমা দেন। কিন্তু টেস্ট না করিয়ে এবং কোন ব্যবস্থাপত্র না দিয়ে শিমুল বিশ্বাসকে রবিবার তড়িঘড়ি করে পুলিশ কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়। সেখানে অসুস্থ শিমুল বিশ্বাসকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রেখে নারায়নগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হয়।
আজ তার সঙ্গে সাক্ষাত করে এসে সরদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, শিমুল বিশ্বাসের শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। হাঁটাচলা করতেও তার সমস্যা হচ্ছে। হাত-পা-চোখ ফুলে গেছে। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। তার দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা জরুরি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কিন্তু আমরা সরকারের কাছে বারবার আবেদন করেও কোন সাড়া পাচ্ছি না। তার পরিবার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন।
শিমুল বিশ্বাসের আইনজীবী ব্যারিস্টার মীর হেলাল জানান, নারায়ণগঞ্জ কারাগারে তার ওপর চালানো হচ্ছে মানসিক নির্যাতন। তাকে গত ৫ মাস ধরে একটি স্যাঁতসেঁতে ছোট অন্ধকার নির্জন কক্ষে রাখা হয়েছে। ডিভিশন প্রাপ্ত বন্দী মানুষ হিসেবে যতটুকু অধিকার পাওয়া কথা সেটি দেওয়া হচ্ছে না। গত ৫ মাস ধরে কারাগারে নানাভাবে তাকে হয়রানী ও হেনস্থা করা হচ্ছে। নিম্ন আদালতে দীর্ঘদিন পর পর জামিনের তারিখ দেওয়া হয় যাতে উচ্চ আদালতে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ না পায়। তার মামলার কাগজপত্রও সরকার দিচ্ছে না।
এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে শিমুল বিশ্বাসের চিকিৎসা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ ও সরকারের অবহেলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রিজভী অবিলম্বে শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের মুক্তি দাবি করেন এবং তার প্রতি সরকারের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
রিজভী বলেন, শিমুল বিশ্বাস বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী। তিনি দলের কোন পদে নেই। তারপরও তাকে কারাগারে দুর্বিসহ পরিবেশে রেখে সীমাহীন মানসিক নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। তার নামে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আদালতে তার মামলার জামিন নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম জিয়ার সঙ্গে থাকা শিমুল বিশ্বাসকে আদালত প্রাঙ্গন থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর তিন দফায় ১৯ দিন রিমান্ডে রাখা হয় তাকে। তখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।