রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের দেখা করার সময় দেশটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ তথ্য দিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতে, ‘উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূল থেকে দু’টি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এখন দেশটির শীর্ষ নেতা কিম বিদেশ সফরে আছেন এবং পুতিনের সঙ্গে দেখা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
বুধবার উৎক্ষেপণ করা অস্ত্রের ধরণ বা পরিসর সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ বলেছেন যে তারা তথ্য বিশ্লেষণ করছেন।
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো সাংবাদিকদের বলেছেন যে জাপান বেইজিংয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র জাপানের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের (ইইজেড) বাইরে সাগরে পড়েছিল।
গত রোববার ব্যক্তিগত বুলেটপ্রুফ ট্রেনে রাশিয়ার উদ্দেশে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেন কিম জং উন। পুতিনের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি দেশটিতে গেছেন। তার সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সামরিক কর্মকর্তারাও আছেন। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ অস্ত্রশিল্পের কর্মকর্তারাও তার সঙ্গে আছেন বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দাবি করছে, উত্তর কোরিয়া এবার রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে।
হোয়াইট হাউস বলেছে, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে অস্ত্র সহযোগিতার বিষয়টি ‘সক্রিয়ভাবে এগিয়ে চলেছে’ বলে তাদের কাছে নতুন তথ্য রয়েছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু উত্তর কোরিয়ার তার সাম্প্রতিক সফরের সময় রাশিয়ার কাছে ‘পিয়ংইয়ংকে আর্টিলারি গোলাবারুদ বিক্রিতে রাজি করাতে’ চেষ্টা করেছেন।
ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডোমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সদস্য অঙ্কিত পান্ডে বলেন, রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়া প্রত্যেকের এমন কিছু জিনিসপত্র রয়েছে যা অন্যান্য দেশও চায়।
তিনি বিবিসিকে বলেন, “এখন যেটি দেখার বিষয় হবে সেটি হচ্ছে পরস্পরকে সহযোগীতা করতে তারা নিজেদের সুবিধাজনক কোনো মূল্য খুঁজে পায় কিনা।”
রাশিয়া হয়তো উত্তর কোরিয়ার কাছে খাবার ও কাঁচামালের বিনিময়ে আর্টিলারি শেল এবং রকেট আর্টিলারির মতো প্রচলিত যুদ্ধাস্ত্রই চাইবে। একইসাথে তারা জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে উত্তর কোরিয়ার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
“এর মাধ্যমে রাশিয়ায় উত্তর কোরিয়ার অত্যাধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র স্থানান্তর করার সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে যাতে করে মস্কো তার নিজের প্রচলিত অস্ত্রের মজুদ আবার পূরণ করে তা ধরে রাখতে পারে।”
ধারণা করা হয় যে, রাশিয়ার হয়তো ১২২এমএম এবং ১৫২এমএম কার্তুজ দরকার কারণ তাদের মজুদ শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু গোপনীয়তার স্বভাবের কারণে উত্তর কোরিয়ার কাছে কী পরিমাণ অস্ত্র মজুদ রয়েছে তা অনুমান করা সহজ নয়।
সূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি