মানবিক সহায়তা হিসাবে পাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার এবং এশীয় প্রতিবেশীদের সাথে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য এই ত্রৈমাসিকে আফগানিস্তানের মুদ্রাকে বিশ্বব্যাপী সক্রিয় মুদ্রার র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে নিয়ে গেছে। যা বিশ্বের সবচেয়ে বাজে মানবাধিকার রেকর্ড থাকার একটি দারিদ্র্যপীড়িত দেশের জন্য অস্বাভাবিক একটি সাফল্য।
দুই বছর আগে কাবুলে মসনদে বসা তালেবান সরকার আফগান মুদ্রাকে শক্তিশালী করতে বেশ কিছু নিয়ম ও ব্যবস্থা চালু করেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে, স্থানীয় লেনদেনে ডলার এবং পাকিস্তানি রুপির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা এবং দেশের বাইর থেকে অর্থ আনার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।
সেই অনলাইনে কেনাবেচা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর এসব আইন লঙ্ঘনের জন্য কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এরিমধ্যে অনেকের সাজাও হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি বছরে বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় মুদ্রার র্যাংকিয়ে কলম্বিয়া ও শ্রীলঙ্কার পরেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে আফগান মুদ্রা।
এরপরও আফগানিন্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। আর্ন্তজাতিক নিষেধাজ্ঞা, দুই তৃতীয়াংশ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা না থাকা ও নিত্যপণ্যের দামের বাড়তে থাকায় দেশটির মুদ্রাস্ফীতির বিপরীতে মুদ্রাহ্রাসে পরিণত করেছে। তাই জাতিসংঘ মনে করে আফগানিস্তানের জন্য আরও সাহায্য প্রয়োজন।
ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কামরান বোখারি বলেন, আফগানিস্তানের হার্ড কারেন্সি বা কাগজের মুদ্রা কাজ করছে, কিন্তু অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এই বৃদ্ধিকে একটি স্বল্পমেয়াদী ঘটনা হিসেবে দেখা যাবে।
আফগানিস্তানে, বৈদেশিক মুদ্রা এখন মূলত মানি চেঞ্জারদের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়। স্থানীয়ভাবে ‘সরফ’ নামে পরিচিত। যারা বাজারে স্টল রাখে বা শহর ও গ্রামে দোকান থেকে কাজ করে। কাবুলের জমজমাট খোলা বাজার সারাই শাহজাদা হল এখন দেশটির প্রধান বাণিজ্য কেন্ত্র। সেখানে প্রতিদিন কয়েক মিলিয়ন ডলারের সমান মুদ্রা বিনিময়। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, এ বাজারে লেনদেনের কোনো সীমা নেই।
আন্তর্জাতিক আর্থিক নিষেধাজ্ঞার কারণে, প্রায় সব রেমিট্যান্স এখন আফগানিস্তানে স্থানান্তরিত করা হয় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত একটি শতাব্দী প্রাচীন ‘হাওলা’ পদ্ধতির মাধ্যমে। হাওলা সরফদের ব্যবসার একটি মূল অংশ। দেশটির এখন সবচেয়ে বড় আয় প্রাকৃতিক সম্পদ।