ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলায় মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। শত শত বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এমন অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। মঙ্গলবার এমন আদেশ দেন তিনি।
এক প্রতিবেদনে খালিজ টাইমস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের ত্রাণ সহায়তা সংস্থা ‘ইউএনআরডব্লিউএ’ এর মাধ্যমে এই সাহায্য ফিলিস্তিনে পাঠানো হবে।
বিশ্বব্যাপী অসহায়, আক্রান্ত ও শরণার্থীদের আরব আমিরাত কর্তৃক জরুরী সহায়তার অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনেও আর্থিক সহায়তা পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয় সংবাদমাধ্যমে।
সাধারণত যুদ্ধ শুরু হলে সামরিক অবস্থানে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। তবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সেসবের কিছুই মানছে না ইসরায়েল। তারা যেন একেবারে সব শেষ করে দিতে হামলা করছে। বেশিরভাগ মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে। হাসপাতাল, স্কুলও বাদ যাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, আস্ত শহর গাজা এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। মাস খানেক আগেও যেখানে সারি সারি বাড়ি, দোকানপাট, কারখানা আর খেজুর-আঙুরের বাগান ছিল, সেখানে এখন কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ। বারুদের গন্ধে ভারী আকাশ। বোমারু বিমানের আওয়াজে আতঙ্ক চারদিকে।
গাজার রাস্তায় চাপ চাপ রক্তের দাগ। নিষ্প্রাণ শহরে ঠিকানা হারিয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল কিছুই অবশিষ্ট রাখছে না ইসরায়েল। শনিবার থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলায় কয়েকশ নারী-শিশুসহ ৯০০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৫ হাজার ফিলিস্তিনি।
শনিবার থেকেই গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ দিয়েছে ইসরায়েল। সেখানে খাবার, পানি, গ্যাস, বিদ্যুত এমনকি জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামও প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমন অবস্থায় গাজাজুড়ে মানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘ ইসরায়েলের এমন অবরোধের নিন্দা জানিয়েছে। এটিকে সরাসরি যুদ্ধাপরাধ বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫০। এছাড়া আরও পাঁচ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
অপরদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুতির ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সংস্থা বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার অগণিত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দুই লাখ ৬৩ হাজার ৯৩৪ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়েছে বলে বিশ্বাস করা হচ্ছে।
হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২০০-এ পৌঁছেছে। তবে তারা বলেছে, হামাস যেখানে হামলা চালিয়েছিল সেই অঞ্চল এখন সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে তাদের সামরিক বাহিনী স্বীকার করেছে যে কিছু ফিলিস্তিনি যোদ্ধা এখনও সক্রিয় আছে এবং তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে বড় ধরনের হামলার চেষ্টায় আছে।