যৌতুক চাওয়ায় স্বামীর বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে মামলা করেছিলেন বাঘারপাড়া উপজেলা হলদা গ্রামের সুরাইয়া ইয়াসমিন। যৌতুকের পাঁচ লাখ টাকা না দেয়ায় স্ত্রীকে মারপিট করে এক কাপড়ে বের করে দিয়েছিলেন স্বামী সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ছলিমপুর গ্রামের মাহির ইসলাম। মাহিরের বাবা, মা এবং ভগ্নিপতিও যৌতুকের দাবিতে ওই গৃহবধূর উপর চালিয়েছে নির্মম নির্যাতন। বাধ্য হয়ে যশোরের আদালতে মামলাটি করেছিলেন বাঘারপাড়া উপজেলা হলদা গ্রামের আনছার আলীর মেয়ে সুরাইয়া ইয়াসমিন।
মামলার পর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন মাহির ও তার পরিবার। বর্তমানে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকিসহ আদালতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করে হয়রানি করছেন। ওই গৃহবধূ ঘুরছেন দ্বারেদ্বারে। বুধবার গ্রামের কাগজ দপ্তরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সুরাইয়া ইয়াসমিন।
সুরাইয়া ইয়াসমিন জানান, এক বছর আগে প্রেম করে মিহিরকে বিয়ে করেছিলেন সুরাইয়া। মিহির সেসময় বিশেষ বাহিনীতে চাকরি করতেন। বিয়ের সময় মিহিরের সংসারে যাওয়ার আগে তিন লাখ টাকার মালামাল দেয় তার পরিবার। বিয়ের কয়েকদিন পর যেতে না যেতেই নানা অযুহাতে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন মিহির। এসময় মিহিরকে ইন্ধন দেন তার বাবা শরিফুল ইসলাম, মা নাজমা খাতুন ও ভগ্নিপতি শার্শা উপজেলার আমলাই গ্রামের মকলেছুর রহমান। টাকা না দেয়ায় তারা খাবারও দিতেন না।
এসব বিষয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বেশ কয়েকবার আলোচনাও হয়। কিন্তু কিছুতেই সুধরায় না মিহির পরিবার। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর সুরাইয়াকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তারা। সুরাইয়ায় বাঘারপাড়ায় বাবার বাড়িতে চলে যান।
পরে সুরাইয়ার পরিবার মিহিরকে খবর দিয়ে আসতে বলে। ১৮ অক্টোবর বাঘারপাড়াতে আসেন মিহির। এসময় তিনি জানান পাঁচ লাখ টাকা অবশ্যই দিতে হবে। অন্যথায় সুরাইয়াকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করবেন তিনি। এ ব্যাপারে বাধ্য হয়ে সুরাইয়া যশোর আদালতে দুটি মামলা করেন। যৌতুকের মামলায় সমন ও পারিবারিক সহিংসতার মামলাটি বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর থেকেই বেপোরোয়া হয়ে ওঠেন মিহির। বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করেছেন তিনি। এছাড়া, গত ২৭ অক্টোবর মনগড়া অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন মিহির। বর্তমানে পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে দাবি করেন সুরাইয়া।
সুরাইয়ার দুলাভাই অয়েজ আলী জানান, বিশেষ বাহিনীতে চাকরি করতেন মিহির। কিন্তু নানা অপরাধে তিনি বরখাস্ত রয়েছেন। মিহির তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা করে হয়রানি করে যাচ্ছেন।