• শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৫ অপরাহ্ন

ট্রাম্পের ৩৭% শুল্ক আরোপ নিয়ে প্রেস সচিব যা বললেন

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিয়েছে। গত বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন। তার এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন শুল্ক হার ১৫ শতাংশ থেকে ৩৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশি পণ্যের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এই শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক নীতি ও অন্য দেশগুলোর মাঝে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। একে অনেক দেশ ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে, কারণ একাধিক দেশই নিজেদের পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি এক পোস্টে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে কাজ করছে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনআরবি) শুল্ক যুক্তিসঙ্গত করার জন্য বিকল্পগুলো দ্রুত চিহ্নিত করছে।

শফিকুল আলম তার ফেসবুক পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একটি ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং আমাদের বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য। ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করি, মার্কিন সরকারের সঙ্গে আমাদের চলমান আলোচনা শুল্ক বৃদ্ধির সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে।

এদিকে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় রফতানি গন্তব্য, বিশেষত তৈরি পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে। প্রতি বছর প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হয়, যার মধ্যে পোশাক শিল্পের অংশই সবচেয়ে বড়। তবে, এই নতুন শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প এবং অন্যান্য রফতানি পণ্য সংকটে পড়তে পারে, কারণ উচ্চ শুল্ক পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিবে, যা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশও এই শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে। ভারতের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে ২৬ শতাংশ, পাকিস্তানের ওপর ২৯ শতাংশ, চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ২০ শতাংশ। বিশেষভাবে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অঙ্গনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, কারণ এটি দেশটির অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।

বর্তমানে মার্কিন পণ্যে বাংলাদেশের আরোপিত শুল্ক ৭৪ শতাংশ, যা মার্কিন সরকারের জন্য এক ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, বাংলাদেশ সরকার আশা করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি সাধনে তারা আলোচনা চালিয়ে যাবে এবং শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় আসবে।

এ ছাড়াও, বাংলাদেশের সরকার মনে করে, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে চলমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা এই সমস্যার সমাধানে সহায়ক হবে, যদিও এখনো এটি পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি। ফলে, বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধি একটি জটিল বাণিজ্যিক সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার জন্য সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ প্রয়োজন।

এই শুল্ক বৃদ্ধি কেবলমাত্র বাংলাদেশের জন্য নয়, অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও একটি বড় সমস্যা তৈরি করেছে, তবে বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব বিশেষভাবে স্পষ্ট হতে পারে, কারণ তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ