বয়সের সঙ্গে দিন দিন বার্ধক্যের দিকে আমরা সবাই অগ্রসর হই এটাই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু বয়সের আগেই বার্ধক্য স্বাভাবিক নয়। অনেক কারণেই অকাল বার্ধক্য দেখা দিতে পারে। যেমন-অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, ঘুম কম হওয়া, শারীরিক অসুস্থতা, খাবারে অনিয়ম, অস্বাস্থ্যকর খাবার ইত্যাদি কারণে বার্ধক্য দেখা যায়। তাই কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললে বার্ধক্য অনেকদিন আটকে রাখা যাবে এবং রোগ-ব্যাধিও দূরে থাকবে। তবে এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত খাবার থাকতে হবে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত খাবার যে দামি খাবার তা নয়, প্রতিদিনের খাত্য তালিকাতে এটি পাওয়া যায়। বিটাক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, লাইকোপিন, ক্রিপট্যোআনথিন, পলিফিনলিক এসিড, ট্যানিন, ভিটামিন এ.সি.ই, কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, আয়রণ ইত্যাদিকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বলে বার্ধক্য প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, পালংশাক, পুঁইশাক, লাউশাক, কুমড়াশাক, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, সজনে ডাটা, নটেশাক ইত্যাদিতে বিটাক্যারোটিন থাকে। ঢেঁড়স, সয়াবিন, মটরশুটিতে থাকে আলফা ও বিটাক্যারোটিন। টমেটো, তরমুজ ও লাল নটেশাকে আছে প্রচুর লাইকোপিন যা উঁচুমানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। পাকা কুমড়া, পাকা পেঁপে, কমলালেবু, পাকা আম ইত্যাদিতে আছে ক্রিপটোঅ্যানথিন, এবং বিভিন্ন রঙিন শাক-সবজি ও ফলমূলে রয়েছে ক্যারোটিনয়েড শ্রেণির প্রায় ৩০০ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
টাটকা শাক-সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও আছে ভিটামিন এ ও সি, কালো জামে লিউটন, আনারস, টমেটো, বাতাবীলেবুসহ সব রকম লেবু, আপেল, কলা, পেয়ারা, বেদানা ইত্যাদিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি যা ফ্রি-রেডিকেলের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং শরীরের কোষ প্রাচীরে ভিটামিন ই নিঃসরণে সাহায্য করে। নানা রকম শস্য যেমন-চাল, গম, সয়াবিন, ডাল, কিশমিশ, মরিচ, খেজুর, বাদাম, সামুদ্রিক মাছ, দুধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অনন্য উত্স। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মসলা যা আমরা রান্নায় ব্যবহার করি তাতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বার্ধক্য রোধে ভূমিকা রাখে।
তাই আবারো বলতে হয়, সুস্থ নিরোগ জীবন এবং বার্ধক্য বিলম্বিতসহ দীর্ঘ জীবন পেতে হলে খাবারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অবশ্যই খেতে হবে।
লেখক: ত্বক, লেজার এন্ড এসথেটিক বিশেষজ্ঞ