• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

সিলেটের জালালি কবুতর

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৮

শত শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে জালালি কবুতর টিকে আছে সিলেটের হযরত শাহজালাল (র)-এর মাজারে। ধর্মপ্রাণ সিলেটের মানুষের বিশ্বাস- এই কবুতর হারিয়ে যেতে পারে না। তাই প্রায় ৭০০ বছর ধরে কবুতরের এই বিশেষ প্রজাতির ওড়াউড়িতে মুখরিত শাহজালাল (র)-এর মাজার।

সারা দিন যেখানে যে বাড়িতেই জালালি কবুতর ওড়াউড়ি করুক না কেন, সন্ধ্যায় ফিরে আসে মাজারে। এই কবুতর যেন আধ্যাত্মিক ও প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। কয়েকশ কবুতর যখন হঠাৎ করেই ডানা ঝাপটে আকাশে উড়ে বেড়ানো শুরু করে, সে এক অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করে। আমি মোবাইল ক্যামেরায় সেই দৃশ্যপট ধারণ করি।

জালালি কবুতরের মাথা-পিঠ-বুক ঘন-ধূসর, ঘাড়-গলা ধাতব সবুজ, তার ওপরে গোলাপি রঙের আভা। ডানার প্রান্তে যেমন দুটো চওড়া কালো ব্যান্ড আছে, তেমনি লেজের আগায় আছে কালচে একটি আড়াআড়ি ব্যান্ড। পা লালচে, ঠোঁট কালচে। ঠোঁটের গোড়ায় সাদা রং। জালালি কবুতর স্বতন্ত্র প্রজাতির না হলেও এর আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

জানা যায়, শাহজালালকে (র) নিয়ে দিল্লির নিজামউদ্দীন আউলিয়ার কাছে তার এক শিষ্য কুৎসা রটনা করলে তিনি তাকে দরবার থেকে বিতাড়িত এবং শাহজালাল (র) সালাম পাঠায়, তখন শাহজালাল (র) একটি বাক্সে প্রজ্বালিত অঙ্গারের সঙ্গে কিছু তুলা পাঠান, যা ছিল একটি আধ্যাত্মিক নিদর্শন। এর পর তাদের সাক্ষাৎ হয় এবং শাহজালাল (র) ফিরে আসার সময় ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ নিজামুদ্দীন আউলিয়া তাকে একজোড়া সুরমা রঙের কবুতর উপহার দেন, যা আজকের জালালি কবুতর বা জালালি কইতর নামে পরিচিত।

কিন্তু নিরাপদ আবাসস্থলের অভাবে আজ এই জালালি কইতর বিলুপ্ত হতে শুরু করেছে; সঙ্গে যোগ হয়েছে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষের এই কবুতর ধরে খাওয়ার লোভ। সিলেটের এই অনিন্দ্য সুন্দর আধ্যাত্মিক নিদর্শন ধরে রাখতে সচেতনতার পাশাপাশি নিরাপদ আবাস্থল গড়ে তোলা খুব বেশি জরুরি হয়ে গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ