আল-আমিন পলাশ
দেশের সেরা বিদ্যাপীঠগুলোর ছাত্রী হলের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড দেশের সাধারন জনগণের মনে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রায়শঃ দেখা যায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকসহ অসংখ্য সাপ্তাহিক পত্রিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে প্রতিবেদন লিখে থাকেন। অথচ দীর্ঘদিনেও এর সুরাহা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে প্রতিদিন অসংখ্য ছাত্রীদের সমন্বয়ে গাজার মহরা বসে এমন অভিযোগ প্রায়ই আমরা পড়ে থাকি পত্রিকার পাতায়। দেশের এলিট শ্রেণীর পরিবারের ছেলে মেয়েরাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে থাকে। প্রথম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুযোগ নেই বললেই চলে। কিন্তু যাদের উপর দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তাদেরই যখন এমন হাল, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর সাধারণ জনগনের মূল্যায়ন কমে যাওয়াই স্বাভাবিক।
ক্যাম্পাসকে ঘিরে প্রতিনিয়ত যে সব খবর ছাপা হয় তার ফলাফল বিবেচনা করলে দেখা যাবে এক শ্রেণির উশৃঙ্খল মেয়েরা (বিশেষ করে যারা রাজনীতির সাথে প্রত্যাক্ষভাবে জড়িত) এতবেশি বেপোরোয়াভাবে ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে চলাফেরা করে যা সাধারণ জনগনের কাছে অন্যসব ছাত্রীদের ভাবমূর্তি মলিন করে দেয়। সঠিকভাবে খোঁজ-খবর নিলে যানা যাবে কোন না কোন রাজনৈতিক নেতার ছত্র ছায়ায় এসব মেয়েরা বিভিন্ন প্রকার মাদক সেবনে নিজেরা যেমন জড়িয়ে পড়ে, তেমনি অন্যান্য রুমমেটদেরকেও মাদকাসক্ত করে ফেলে। এতে তাদের নৈতিক অবক্ষয়সহ জীবনের মূল্যবোধ হ্রাস পায়। ফলে একের পর এক অপরাধ করেও তাদের সংশোধনের স্পৃহা থাকেনা। পাশাপাশি হাতে গোনা কয়েকজন ছাত্রীদের অশালীন চলাফেরা ও আচারণের কারণে অভিভাবকমহল দিনের পর দিন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরেন। বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ইতি পূর্বেই ছাত্রীহলের বেশকিছু ছাত্রীদের নামের পূর্বে বিশেষ কতক বিশেষণ লাগানো হয়েছে। কারো নামের পূর্বে “ফেন্সি” আবার কারও নামের পূর্বে “হুইস্কি” শব্দের ব্যবহার দেখা গেছে। অথচ তাদের কূখ্যাতি সমাজের সর্বস্তরের জনগনের মধ্যে প্রকাশিত হলেও তাদের পরিবর্তনের কোন লক্ষণ আদৌ দেখা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে উশৃঙ্খল জীবন যাপনে এরা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আর তাদের এই অধঃপতনের মূলে যে রাজনীতি রয়েছে তা ইতিপূর্বে ইডেন কলেজের ছাত্রীরাই প্রমাণ করেছে। ছাত্রী হলের সিট ব্যবসা নিয়ে সরকার সমর্থক ও সাধারণ ছাত্রীদের সংঘর্ষের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দেশের বিবেক সম্পন্ন মানুষের মধ্যে কলেজটি সম্পর্কে অতীতের ধারনা পাল্টে দিয়েছে। রাজনীতির ধ্বংসাত্মক থাবা থেকে দেশের কলেজগুলোকে আর কোন কালেই রক্ষা করা যাবে বলে মনে হয় না। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভালো পরিবারের ছাত্রীদের পড়াশুনা করার সুযোগ থাকবে না। অভিভাবক মহলের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে যে ধারনার জন্ম হয়েছে তা অদূর ভবিষ্যতে ছাত্রীদের পড়াশুনার জন্য এক বড় ধরনের অন্তরায় হয়ে দেখা দেবে।