• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

নজরুলের স্বকণ্ঠে গাওয়া গান

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৪
সংগৃহীত ছবি

শাহীনুর রেজা

গান গাওয়ার জন্য কেমন ছিল নজরুলের কণ্ঠ ? মুজফ্ফর আহমেদের স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়, ‘খুব সুকণ্ঠ ছিলো না নজরুলের, তবে সমস্ত দরদ দিয়ে গান করতেন তিনি। তাই সকলেই তাঁর গান শুনতে চাইতেন।’ এখানে আমাদের আলোচ্য নজরুলের স্বকণ্ঠের গান। 
আমরা জানি, নতুন কোনো গানের ক্ষেত্রে নজরুল প্রথমে একটি সুর মনে নিয়ে তার ওপর বাণী বসাতেন। এরপর প্রয়োজন অনুসারে কোনো শিল্পীর কণ্ঠে তা তুলে দিতেন। রেকর্ড কোম্পানি, নাটক, সিমেনায় ব্যবহৃত হওয়া কবির গানের সংখ্যা খুব কম। তাঁর কর্মব্যস্ততা বা উদাসীনতাই হয়তো এর কারণ। 
বিভিন্ন সভা-সমিতির মঞ্চে নজরুল সাধারণত তাঁর জাগরণীমূলক গানই পরিবেশন করতেন। কুমিল্লায় অবস্থানকালে তিনি প্রিন্স অব ওয়েলসের ভারত আগমন উপলক্ষে ‘ভিক্ষা দাও! ভিক্ষা দাও! ফিরে চাও ওগো পুরবাসী’ গানটি লেখেন। গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে মিছিলের অগ্রভাগে নজরুল সবার সঙ্গে সমবেতভাবে রাস্তায় এ গানটি গান। আমাদের প্রাপ্ত তথ্যমতে প্রায় ৩২টি গানে নজরুল কণ্ঠ দিয়েছেন। আরও অনুসন্ধানে এ সংখ্যা বাড়বে বৈ কমবে না। নিচে নজরুলের স্বকণ্ঠে গাওয়া গান নিয়ে আলোকপাত করা হলো:

১. ‘কেন আসিলে ভালোবাসিলে’
ভৈরবী রাগে গজল শ্রেণির এ গানে নজরুল কণ্ঠ দেন ১৯৩৩ সালের এপ্রিলে, যা মেগাফোন কোম্পানি থেকে প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নং জেএনজি ৪৪। সুরকার ছিলের নজরুল নিজে।
২. ‘ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবিরে’
বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ উপলক্ষে ১৯৪১ সালের ৭ আগষ্ট সন্ধ্যায় নজরুল সহশিল্পী সুনীল ঘোষ ও ইলা ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে বেতারে এ গানটি গেয়েছিলেন। পরে ১৯৪১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এইচএমভি থেকে গানটি প্রকাশিত হয় এবং গীতিগ্রন্থ বুলবুল দ্বিতীয় খণ্ডে স্থান পায়। গানটির রেকর্ড নং-এন ২৭১৮৮।
৩. ‘পাষাণের ভাঙালে ঘুম’
দাদরা তালে ভীমপলশ্রী রাগের নজরুলের গাওয়া এই গজল গানটি বন-গীতি গীতিগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সালে মেগাফোন কোম্পানি থেকে গানটির রেকর্ড বের হয়। সুরকার ছিলেন নজরুল নিজে।
৪. ‘দিতে এলে ফুল হে প্রিয়’
যোগিয়া মিশ্র রাগে কাহারবা তালে গজল শ্রেণির একটি জনপ্রিয় গান এটি। এরও সুরকার ছিলেন নজরুল। এ গানটিও বন-গীতিগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
নজরুলের গাওয়া উপরিউক্ত দুটি গান সম্পর্কে রেকর্ড বুলেটিনে এরকম মন্তব্য মুদ্রিত হয়:
‘এই গান দুইটি গাহিয়াছেন বঙ্গবাণীর প্রিয় দুলাল কবিবর কাজী নজরুল ইসলাম। কথা ও সুর তাঁহার নিজের। কবির সর্বতোমুখী প্রতিভার সহিত বাঙ্গালী আজ সর্বতোভাবে পরিচিত, তাই নতুন করিয়া তাঁর পরিচয় কি দিব। তবে ইহা বিদ্রোহী কবির অন্তর্নিহিত জ¦ালার গৈরিক নিঃস্রাব নয়, ইহা দরদী কবির দরদী দিনের দুঃখ-দরিয়ার ফেলিল উচ্ছ্বাস।…’
৫. ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু’
১৩৩৩ সালের ৬ জ্যৈষ্ঠ কৃষ্ণনগরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনের জন্য নজরুল এ গানটি রচনা করেন এবং তাতে কণ্ঠ দেন। পরবর্তী সময়ে নিতাই ঘটকের সুরে গানটিতে কণ্ঠ দেন শিল্পী সত্য চৌধুরী, যা ১৯৪৭ সালের এপ্রিলে এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নং-এন২৭৬৬৬। গানটি নজরুলের সর্বহারা গ্রন্থে স্থান পায়। ১৩৩৩ সালের আশি^ন সংখ্যা কালি কলম পত্রিকায় নজরুলের করা স্বরলিপিসহ গানটি প্রকাশিত হওয়ার পরও আবার তাতে নতুন করে সুর দেওয়ার কী প্রয়োজন হলো তা জানা যায় না।
৬. ‘দাঁড়ালে দুয়ারে মোর’
পাহাড়ি মিশ্র রাগে দাদরা তালে নিবদ্ধ নজরুলের গাওয়া এই গানটি মেগাফোন কোম্পানি থেকে ১৯৩৩ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নং-জেএনজি ৪৪।
৭. ‘দাদা বলতো কিসের ভাবনা’
শিল্পী সারদা গুপ্তের গাওয়া এ গানে সহশিল্পী হিসেবে ছিলেন রঞ্জিত রায় ও নজরুল। ১৯৪০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মেগাফোন কোম্পানি গানটি রেকর্ড করে। কিন্তু ইংরেজ সরকার কর্তৃক রেকর্ডটি নিষিদ্ধ হওয়ায় রেকর্ডটি শেষ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। কোম্পানির টেস্ট কপি রেজিস্ট্রার থেকে পাওয়া নং: ড়.স.প ১০৫০৪
৮. ‘চরশ মেশা চণ্ডুর নেশা’
এই গানেরও মূল শিল্পী ছিলেন সারদাগুপ্ত। কণ্ঠে সহযোগিতা করেছেন রঞ্জিত রায় ও নজরুল। গানটির ট্রেনার ও সুরকার রঞ্জিত রায়। ১৯৪০ সালের ডিসেম্বরে মেগাফোন কোম্পানির থেকে গানটি প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নং-জেএনজি ৫৫২৫।
৯. ‘জপে ত্রিভুবন শ্রীকৃষ্ণকে নাম’
এটি নজরুল রচিত একটি হিন্দি গান। শিল্পী ছিলের রেবা সোম। সহশিল্পী ছিলেন ধীরেন দাস ও নজরুল। নজরুলের সুরে গানটি জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে এইচএমভি থেকে প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নং-এন ১৭০২২।
১০. ‘জয় আনন্দ ভৈরব’
বেতার জগৎ পত্রিকার ১ জুলাই ১৯৪১ সংখ্যা সূত্রে জানা যায়, কলকাতা বেতারের ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে ১৯৩৯ সালের ১ নভেম্বর নজরুল এ গানটি গেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৪১ সালের ১ জুলাই গীতাবসু (মিত্র) তাঁর একক অনুষ্ঠানে এবং একই বছরের ১৩ জুলাই আবার সংগীতালেখ্য ‘ষট ভৈরব’-এ গানটি গেয়েছেন।
১১. ‘জয়তু শ্রীকৃষ্ণ শ্রীকৃষ্ণ মুরারী’
এটি নজরুলের লেখা ও সুর করা আরেকটি হিন্দি গান। গানটির শিল্পী ছিলেন রেবা সোম, সহযোগী শিল্পী হিসেবে কণ্ঠ হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন ধীরেন
১২. ‘নিয়ে ষণ্ডামার্কা গিন্নি’ 
নজরুলের সুরে শিল্পী সারদা গুপ্তের কণ্ঠে গানটি মেগাফোন কোম্পানি থেকৈ ১৯৪০ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নং-জেএনজি ৫৫২৫। রেকর্ডে ‘দে গরুর গা ধুইয়ে’ কথাটার নজরুলের কণ্ঠ আছে।
১৩. ‘নৃত্যকালী শঙ্কর সঙ্গে নাচে’
ঝুমরা তালে বাঙ্গাল ভৈরব রাগে এ গানটির সুরকার নজরুল। ১৯৪০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা বেতারের ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে কবি এ গানটি পরিবেশন করেন। পরে ১৯৪১ সালের ১৩ জুলাই শৈল দেবী বেতারের সংগীতালেখ্য ‘ষট ভৈরব’-এ গানটি করেন।
১৪. ‘ফুটিল মানস মাধবী কুঞ্জে’
‘ধ্রুব’ চলচ্চিত্রে এটি নারদের গান। কণ্ঠ দিয়েছেন নজরুল। ‘ধ্রুব’ মুক্তি পায় ১৯৩৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর। অনেক পরে ১৯৪৯ সালের জুলাইয়ে এইচএমভি থেকে গানটি প্রকাশিত হয়। রেকর্ড নং-এন ৩১০৫১।
১৫. ‘ফোটে কমল কেমন করে’ 
নজরুল রচিত এটি একটি কলহ পালাকীর্তন। ১৯৪১ সালের ১২ জানুয়ারি গানটি বেতারে প্রচারিত হয়। গানটির সুর করেছেন নজরুল।
ব্রহ্মমোহন ঠাকুর তাঁর নজরুল সংগীত নির্দেশনা গ্রন্থে গানটির শিল্পী হিসেবে চিত্তরায়ের নাম উল্লেখ করেছেন। যদিও নজরুল সঙ্গীত অভিধান গ্রন্থে আবদুস সাত্তার একই গানের শিল্পী হিসেবে লিখেছেন নজরুল ও শৈল দেবীর নাম। উল্লেখ্য, দুটি গ্রন্থই প্রকাশিত হয়েছে নজরুল ইনস্টিটিউট থেকে।
১৬. ‘বল রাঙা হংসদূতী’ 
বেতারে প্রচারিত ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর নজরুল স্বয়ং এ গানটি গেয়েছিলেন। নজরুলের সুরে আদ্ধা কাওয়ালী তালে গানটির রাগ রক্তহংস সারং। পরবর্তী সময়ে শিল্পী শৈল দেবী ‘সারঙ্গ রঙ্গ’ অনুষ্ঠানে গানটি করেন। প্রচারের তারিখ ছিল ১৯৪০ সালের ৬ এপ্রিল ও ২৩ নভেম্বর এবং ১৯৪২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থের ৩য় সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৭. ‘বলেছিলে ভুলিবে না মোরে’
এ গানটি নজরুল কলকাতা বেতারের ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে ১৯৪১ সালের ২০ নভেম্বর পরিবেশন করেন। গানটি আনন্দী রাগে ত্রিতালে নিবদ্ধ। পরে ১৯৪১ সালের সেপ্টেম্বরে গানটি সেনোলা রেকর্ড কোম্পানি থেকে শিল্পী বিমল ভূষণের কণ্ঠে রেকর্ড করা হয়। যদিও পরে রেকর্ডটি বাতিল হয়।
১৮. ‘বসন্ত মুখর আজি’
বুলবুল ২য় খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত এ গানটির রাগ বসন্তমুখারী, তাল ত্রিতাল। ১৯৩৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর কলকাতা বেতারের ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে নজরুল গানটি পরিবেশন করেন।
১৯. ‘বুলবুলি নীরব নার্গিস বনে’
‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে প্রচারিত নজরুলের গাওয়া আরেকটি জনপ্রিয় গান এটি। এই গানটি প্রচারের দুটি তারিখ পাওয়া যায়। ১৯৪০ সালের ২৬ অক্টোবর ও ১৯৪৯ সালের ২৭ নভেম্বর। তারও আগে ১৯৪০ সালের ১৬ মার্চ ‘ইরানের স্বপ্ন’ গীতি-অনুষ্ঠানে শিল্পী গীতা মিত্রের কণ্ঠে গানটি প্রচারিত হয়। গানটির সুরকার নজরুল আর রাগ নভরোচিকা।
২০. ‘মদালস ময়ূর-বীণা বাজে’ 
শেষ সওগাত গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত এ গানটি নজরুল প্রথমে গান ১৯৪০ সালের ৮ জানুয়ারি কলকাতা বেতারের ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে। পরে ১৯৪১ সালের ১৩ জুলাই বেতারের ‘ষট ভৈরব’ অনুষ্ঠানে শিল্পী দেবী গানটি পরিবেশন করেন।
২১. ‘মধুর ছন্দে নাচে আনন্দে’
‘ধ্রুব’ চলচ্চিত্রে নারদের চরিত্রে অভিনয় ছাড়াও গানটিতে সুর ও কণ্ঠ দিয়েছেন নজরুল। চলচ্চিত্রটি ১৯৩৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর ছবিটি মুক্তি পায়।
২২. ‘শুধু নদীয়ার নহ তুমি’
জুলাই ১৯৩৪ সালে শান্তিপুরে খান বাহাদুর মোহাম্মদ আজিজুল হকের সংবর্ধনা সভার জন্য কবি এ গানটি লেখেন ও তাতে কণ্ঠ দেন।
২৩. ‘হৃদি পদ্মে চরণ রাখো’
‘ধ্রুব’ চলচ্চিত্রের আরেকটি গান। কীর্তনাঙ্গের এ গানটিতে মাস্টার প্রবোধ ও নজরুল কণ্ঠ দেন।
২৪. ‘গহন বনে শ্রীহরি নামের
এ গানটি নজরুল ‘ধ্রুব’ চলচ্চিত্রের টাইলের সং হিসেবে পরিবেশন করেন।
নাচঘর পত্রিকার ৭ পৌষ ১৩৪০ সংখ্যায় এটি প্রকাশিত হয়। গানটির সুরকারও ছিলেন নজরুল।
২৫. ‘জাগো বিরাট ভৈরব যোগ সমাধি মগ্ন’
কলকাতা বেতারের ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে ১৯৪০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নজরুল এ গানটি পরিবেশন করেন। গানটির রাগ: বিরাট ভৈরব, তাল: ঝাঁপতাল। ১৯৪১ সালের ১৩ জুলাই সংগীতালেখ্য ‘ষট ভৈরব’-এ নজরুল এ গানটি পরিবেশন করেন।
২৬. ‘সন্ধ্যামালতী যবে ফুলবনে ঝুরে’
১৯৪০ সালের ৩০ জুলাই কলকাতা বেতারের ‘হারামণি’ অনুষ্ঠানে নজরুল এ গানটি পরিবেশন করেন। (ধানশ্রী রাগে ভৈরব ঠাট) ত্রিতালে নিবদ্ধ গানটির ব্যাখ্যা করেন সুরেশ চক্রবর্তী। ‘সন্ধ্যামালতী’ শিরোনামে নজরুলের বন-গীতি গীতিগ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে এ গানটি সংযোজিত হয়। ভারতবর্ষ পত্রিকার মাঘ ১৩৪৫ সংখ্যায় জগৎ ঘটককৃত এ গানের স্বরলিপি প্রকাশিত হয়।
২৭. ‘ছেড়ে দাও মোরে’
১৯৪১ সালের ২৭ মার্চ কলকাতা বেতারের ধারাবাহিক অনুষ্ঠান ‘হারামণি’তে নজরুল এ গানটি পরিবেশন করেন। হর্ষকানাড়া রাগের এ গানের সুরও করেন কবি নিজে। কিন্তু ১৯৪৯ সালের সেপ্টেম্বরে নজরুল যখন অসুস্থ, তখন এইচএমভি থেকে নিতাই ঘটকের সুরে ও সত্য চৌধুরীর কণ্ঠে গানটির রেকর্ড প্রকাশিত হয়। তাতে গানের বাণী ও সুর দুয়েরই পরিবর্তন করা হয়েছে।
২৮. ‘তুমি কোন পথে এলে’
১৩৩৮ বঙ্গাব্দের ৬ ভাদ্র বেলঘরিয়া রসচক্র সাহিত্য সংসদ আয়োজিত কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান উপলক্ষে নজরুল এ গানটি লেখেন এবং পরিবেশন করেন। কীর্তনাঙ্গের এ গান নজরুলের সুরসাকী গীতিগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
২৯. ‘আলাপের যে ফুরসতই নেই’
‘প্রীতি উপহার’ শিরোনামে এটি বিয়ে বাড়ী নাটিকার গান। চরিত্র: দুই বেয়াই ও বেয়ান। শিল্পী ছিলেন নজরুল, আশ্চর্যময়ী ও তুলসী লাহিড়ী। জানুয়ারি ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে এইচএমভি থেকে গানের রেকর্ডটি প্রকাশিত হয়।
৩০. ‘এস এস রসলোক বিহারী’
১৯৩২ সালের ২৫ ডিসেম্বর কলকাতার এলবার্ট হলে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সম্মেলনের পঞ্চম অধিবেশনের জন্য উদ্বোধনী সংগীত হিসেবে নজরুল এ গানটি রচনা করেন এবং তাতে কণ্ঠ দেন। ভৈরবী রাগে একতালে নিবদ্ধ এই গান নজরুলের গুলবাগিচা গীতিগ্রন্থে মুদ্রিত হয়েছে। মোহাম্মদী পত্রিকার মাঘ ১৩৩৯ এবং মোয়াজ্জেন পত্রিকার পৌষ ১৩৩৯ সংখ্যায় ‘উদ্বোধন গীতি’ শিরোনামে গানটি প্রকাশিত হয়।
৩১. ‘ওরে ধ্বংস পথের যাত্রীদল’
১৯২৬ সালের ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগরে অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ প্রজা সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনের উদ্বোধনী সংগীত হিসেবে নজরুল গানটি রচনা করেন এবং কণ্ঠ দেন। লাঙল পত্রিকার ফাল্গুন ১৩৩২ সংখ্যায় গানটি প্রকাশিত হয়। ‘শ্রমিকের গান’ শিরোনামে সর্বহারা কাব্যগ্রন্থে এই গান মুদ্রিত হয়েছে।
৩২. ‘জাগিলে পারুল কি গো’
১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মিস ফজিলাতুন্নেসার বিলাত গমন উপলক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য নজরুল এ গানটি রচনা করেন এবং গেয়ে শোনান। ভীমপলশ্রী রাগে দাদরা তালে নিবদ্ধ গানটি নজরুলের বুলবুল গীতিগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
বলেছি, নজরুল কণ্ঠ দিয়েছেন এমন গানের তালিকা আরও দীর্ঘ হবে। কিন্তু গবেষণার অভাবে তা আজও পুরোপুরি অজানা।



লেখক : সাহিত্য ও সংগীত ব্যক্তিত্ব

ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক দৈনিক সংবাদ সংযোগ পত্রিকা

shahinurmusic70@gmail.com


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ