• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন

আক্ষেপ-উচ্ছ্বাসের শেষ ৫ ওভার

আপডেটঃ : শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭

টেস্ট-ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ। নিদেনপক্ষে যেটুকু লড়াই আশা করেছিল তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি মুশফিক-মাশরাফিদের দল। অন্তত টি-২০ তে এসে কিছুটা লড়াই করেই হেরেছে বাংলাদেশ। গেফরশু রাতে ব্লমফন্টেইনে ২ ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ২০ রানে হেরেছে সাকিবের দল। দক্ষিণ আফ্রিকার করা ১৯৫ রান তাড়ায় ২০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পারে ৯ উইকেটে ১৭৫ রান। সিরিজের ২য় ম্যাচটি হবে পচেফস্ট্রুমের সিনউইস পার্কে আগামীকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
রান তাড়ায় জিততে হলে নতুন রেকর্ড গড়তে হতো বাংলাদেশকে। এই ফরম্যাটে রান তাড়ায় তো বহুদূর, আগে ব্যাট করেও কখনও ১৯০ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯০ রানই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। পরে ব্যাট করে সর্বোচ্চ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে ১৮৯। রান তাড়ায় জয়ের রেকর্ড ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৬৪। তবে হতে হতেও যেন হলনা।
সৌম্য সরকার ছন্দে থাকলে যেমন খেলেন, এদিন খেলেছেন ঠিক সেভাবেই। হেনড্রিকসের বলে পিক আপ শটে ছক্কা, দারুণ ড্রাইভ ও পুল, স্পিনে বেরিয়ে এসে ছক্কা। কিন্তু ফিফটি করতে পারলেন না। ৩১ বলে ৪৭ করে ফিরলেন সৌম্য। আগে একবার আউট হয়েছিলেন ৪৮ রানে। টি-টোয়েন্টি অর্ধশতক অধরাই থাকল তার। বাকিদের আসা যাওয়ার মিছিলে শেষ দিকে সাইফ উদ্দিনের সৌজন্যে শুধুই কমেছে ব্যবধান। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা এই অলরাউন্ডার অপরাজিত ছিলেন ২৭ বলে ৩৯ রান করে। তবে ম্যাচ শেষ কার্যত শেষের বেশ আগেই। সৌম্য যতক্ষণ ছিলেন, ছিল বাংলাদেশের আশা। সৌম্যর বিদায়ের পর সকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে আশার সমাপ্তি। ম্যাচ শেষে সেই আক্ষেপই ঝরলো দলের সেরা পার্ফরমার সৌম্য কণ্ঠে, ‘
পচেফস্ট্রুমে আগামীকাল দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সেই ম্যাচে আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে উন্মুখ সৌম্য, ‘ওরা (দক্ষিণ আফ্রিকা) দুইশর মতো রান করেছে। আমরা ১৭৫ রান করেছি। অবশ্যই আমাদের সামর্থ্য আছে পুরোটা যাওয়ার। মাঝখানে যদি একজন ব্যাটসম্যান রান পেত আমরা হয়তো সহজেই ম্যাচটা জিতে যেতাম। এখান থেকে আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস বেড়েছে যে, আমরা দুইশ রান করতে পারি।’
গত বছর ডিসেম্বরে নিউ জিল্যান্ড সফরে গিয়ে সব ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকায় তার পুনরাবৃত্তির শঙ্কা। দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডের পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও হেরেছে অতিথিরা। এই ফরম্যাটেও বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে ডট বল। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ২২টি ডট বলের বিপরীতে অতিথিদের ডট বল ৪৫টি। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে চার-ছক্কা থেকে এসেছে ৮৮ রান, বাংলাদেশের ইনিংসে ৯৮। আরও একবার চড়া দামে অতিথিরা জেনেছে ১-২ রান কত গুরুত্বপূর্ণ। পরের ম্যাচে এদিকে নজর দেওয়ার কথা জানান বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, ‘ডট বল তো টি-টোয়েন্টিতে বড় একটা ব্যাপার। কিন্তু তার আগে আমরা যখন ফিল্ডিং করেছি, রান আরও কম দিতে পারলে ভালো হত। কিছু বল ওয়াইড হয়েছে। ফিল্ডিংয়ে একটা-দুইটা মিস হয়েছে। ওই রানগুলো যদি আমরা না দিতাম তখন দেখা যেত আরও ২০টা রান কম হত। ওদের রান থাকত ১৭০ এর মতো। ওই রান পেলে একটা আলাদা মনোবল থাকত। ডট বল হয়েছে, এটা অবশ্যই আমাদের জন্য ভালো না। পরের ম্যাচে যদি ডট বল কমাতে পারি তাহলে রান আরও বেশি হবে।’
তবে এই হারের পেছনে শেষ ৫ ওভারকেই দায়ী করছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, ‘আমার মনে হয় দক্ষিণ আফ্রিকা দারুণ ব্যাটিং করেছে। বিশেষ করে শেষ পাঁচ ওভারে। শেষ পাঁচ ওভারই আমাদের হারিয়ে দিয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা ১৫-২০ রান বেশি দিয়েছি। তবে প্রথম ১০ ওভার আমরা দারুণ ব্যাটিং করেছি। কিন্তু সেটা পরবর্তীতে ধরে রাখতে পারিনি। আমাদের স্পিনাররা ভালো করেছে। কিন্তু কিছু বাজে ফিল্ডিং আমাদের ভুগিয়েছে। আরো একটি ম্যাচ বাকি আছে। কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে আমাদের। ব্যাটিং-এ ডট বল বেশি হয়েছে, যা আমাদের ভুগিয়েছে। আগ্রাসী এবং বুদ্ধিমান ব্যাটিংও করতে হবে আমাদের।’
সাকিবের যেখানে শেষ ৫ ওভারের আক্ষেপ, সেই একই ওভার নিয়ে উচ্ছ্বাস ঝরলো প্রোটিয়া অধিনায়ক জেপি ডুমিনির কণ্ঠে, ‘১৯৫ রান খুবই ভালো স্কোর। বিশেষ করে শেষদিকে দুর্দান্ত একটি জুটি গড়েছে মিলার ও বেহারডিন। তাদের ৬২ রানের জন্যই বড় স্কোর গড়তে পেরেছি আমরা। বাংলাদেশের শুরুটাও চমৎকার ছিলো। তবে পরের দিকে আমাদের বোলাররা ভালো বল করেছে। এখন আমাদের লক্ষ্য পরের ম্যাচে ভালো খেলা এবং সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করা।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ