বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক সম্পর্ক এবং বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়। নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে গতকাল এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অন্যদিকে ঢাকায় অবস্থানরত জাতিসংঘের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য নজিরবিহীন নিরাপত্তা কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। তাদের চলাচলকে সীমিত করার পরামর্শ দিয়ে বলা হয় তারা ঢাকার গুলশান-১ এবং গুলশান-২ এলাকায় দুটি রেস্তোরাঁয় বাইরে রয়েছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। জাতিসংঘের ঢাকা অফিসের জন্য এসব পদক্ষেপ অনুমোদন করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেডের (ডিএফএটি) ওয়েবসাইটে দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়, যদি একান্ত প্রয়োজনে বাংলাদেশ সফরে যেতেই হয়, তাহলে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। চোখ-কান খোলা রেখে বিকল্প প্রস্তুতি ভেবে রাখতে হবে। সরকারী ওই সংস্থাটি আরো বলেছে, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। বিশ্বাসযোগ্য সুত্রে জানা গেছে যে, আততায়ীরা পশ্চিমা দেশের নাগরিকদের টার্গেট করতে পারে। অতএব, একান্ত যদি বাংলাদেশে যেতেই হয়, তবে আপনার অবস্থানকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। সম্ভব হলে ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করুন। এর আগেও অষ্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে কয়েক দফায় সফর বাতিল করা হয়। অতপর অষ্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল বাংলাদেশে সফরে আসে এবং নিরাপদে খেলে হোয়াইট ওয়াশ হয়ে ফিরে যায়।
এদিকে ঢাকায় অবস্থানরত জাতিসংঘের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য নজিরবিহীন নিরাপত্তা কড়াকড়ি আরোপ করেছে সংস্থাটির নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা টিম (সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট টিম-এসএমটি)। এতে ঢাকার যে দুটি হোটেলকে (এডিশনালী) জাতিসংঘ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে তা হলো দ্য বেঙ্গল বøুবেরি গুলশান-২ এবং ন্যাসসেন্ট গার্ডেনিয়া সুটস গুলশান-২। ঢাকায় জাতিসংঘ মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনুমোদিত নিরাপত্তা কড়াকড়ির বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ইস্যু করা নিরাপত্তা বার্তায় স্পষ্ট করে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, গুলশান-১ ও ২ অঞ্চলে কূটনৈতিক এলাকায় যেসব রেস্তোরাঁ জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে সেখানে সব জায়গায় উত্তম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এ বিষয়টি সব সময় মাথায় রাখতে হবে। রেস্তোরাঁগুলোর নিরাপত্তার বিষয়ে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রহরী, বিভিন্ন জিনিসের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ব্যাগ স্ক্যানিং, মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবহার, শক্তিশালী দরজা ও জরুরি বহির্গমনের পথের বিষয়টি সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। হোটেলে যেখানেই কর্মকর্তা-কর্মচারী বা যাদের পরিবারের সদস্যরা বসেন না কেন, তাদের গাড়ি পার্কিং করতে হবে যতটা সম্ভব কাছে। রেস্তোরাঁ থেকে পার্কিংয়ের দূরত্ব হতে হবে সর্বনিম্ন। উত্তম নিরাপত্তার জন্য সেখানে সশস্ত্র পুলিশের উপস্থিতির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নিরাপত্তা সতর্ক বার্তায় জনবহুল স্থানে নৈশভোজে অংশ না নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বলা হয় পূর্ব ঘোষিত সময় ও তারিখে নিয়মিত কোনো স্থানে জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে। কোনো জমায়েতেই বেশি রাত পর্যন্ত থাকা যাবে না। রাত ১০টার মধ্যেই ঘরে ফিরতে হবে। যাতে অপরাধের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সার্বিকভাবে নজরদারি ও সচেতনতা অবলম্বন করতেও পরামর্শ দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা বার্তায়।