মাঘের মাঝামাঝি সময়ে উত্তরের জেলা নওগাঁয় তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ৮ ডিগ্রির ঘরে। তবে সকাল থেকেই কুয়াশার দাপট না থাকলেও কনকনে শীতে আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নওগাঁর জনপদের মানুষদের।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়া ধারণ করা হচ্ছে আজকের ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে শনিবার নওগাঁয় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয়রা জানায়, রোববার সকাল থেকেই ভোরের কুয়াশা ও মেঘমুক্ত আকাশ সূর্য উঠতে দেখা গেছে। তবে হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। গত দু’দিন থেকে সূর্যের দেখা মিলছে। কিন্তু সূর্যের খুব একটা উত্তাপ থাকে না। আবারো বিকেল হতেই তাপমাত্রা নিম্নগামী হতে শুরু করে। রাতের বেলায় মনে হয় তাপমাত্রা জিরোতে নেমে আসে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়ে সমানতালে।
এদিকে কনকনে এই শীতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে নিম্নআয়ের ও কৃষিনির্ভর মানুষকে। জীবিকার তাগিদে সকাল হলেই এসব মানুষ মোটা গরম কাপড় পড়ে কেউ সাইকেল নিয়ে আবার কেউ পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন। এছাড়াও নওগাঁতে এখন চলছে বোরো ধান রোপণের ভরা মৌসুম। এই শীতের কারণে ধান রোপনে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।
বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকার রিকশাচালক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আজকে সকাল থেকেই কুয়াশা কম, রোদ উঠেছে। তবে উত্তরের হিমেল বাতাস মানুষকে কাবু করে ফেলেছে। এই কারণে শরীরের ভিতরে শীত লাগে। সকাল আর বিকালের পর থেকে শীত বেশি পড়ে। তখন রিকশা চালানো খুব জটিল হয়ে পড়ে।’
সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘গত দু’দিন থেকেই রোদ বের হচ্ছে। তবে সকালে জমিতে নামা যায় না। পানিতে পা দিলে মনে হয় হাত-পা বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যায়। আর এখন ধান লাগানোর কাজ চলছে। এই ঠান্ডায় সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত কাজে নামাই যায় না।’
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আকাশে মেঘ না থাকায় আজ রোববার কুয়াশার পরিমাণ কম ছিল। একইসাথে সূর্যের দেখাও মিলেছে। তবে কুয়াশা না থাকলেও নওগাঁ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। যা আজকে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো: আব্দুল আউয়াল জানান, এ পর্যন্ত নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলা ও তিনটি পৌরসভা এলাকার অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে গরম কাপড় হিসেবে ২০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় দফায় অসহায় গরীব ও শীতার্ত মানুষের জন্য গরম কাপড় কেনার জন্য ৬৭ লাখ টাকা বরাদ্দ এসেছিল। এই ৬৭ লাখ টাকা দিয়ে কম্বল, চাদর, সোয়েটারসহ গরম কাপড় কিনে নওগাঁর ১১টি উপজেলা ও তিনটি পৌরসভা এলাকায় ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে শতভাগ গরম কাপড় দুস্থ অসহায় ও গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি