বিপিএলে দেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকেন অনেক বিদেশিরা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই নজর থাকে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের ওপর৷ কিন্তু বিপিএল ঘিরে সমালোচনার কমতি হয় না কখনওই।
এবারের আসরে আলোচনার কেন্দ্রে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ইস্যু। টাকা না দেওয়ায় দুর্বার রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা একটি ম্যাচে মাঠেই নামেননি। পারিশ্রমিক নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ আছে চিটাগাং কিংসের বিপক্ষেও।
এই ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পুরোনো। ২০১২ সালে তামিম ইকবালকে প্রাপ্য অর্থ দেয়নি তারা। এ নিয়ে তার তখনকার অভিযোগও এখন সামনে এসেছে। এ বিষয়টি পরিষ্কার করে তামিম বুধবার বলেছেন, এমন কাণ্ড শুধু বিপিএলকে ছোট করে না; বাজে বার্তা দেয় দেশ নিয়েও।
ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ম্যাচের পর তিনি বলেন, ‘আমিও দেখেছি ২০১২-র ইস্যুটা বারবার আনা হচ্ছে। এটা আসলে ২০১৩ সালে। বোর্ডে যারা এসেছিলেন, আমাকে একটা পেমেন্ট দিয়েছিলেন। ঐ এমাউন্ট ছিল না, তার চেয়ে কম ছিল। তবে সমাধান হয়ে গিয়েছিল। আমি চাই বিপিএল অনেক ভালো করুক, অনেক নাম করুক। একটা সময় আমরা অনেক দ্রুত আগাচ্ছিলাম। যখন ফ্র্যাঞ্চাইজি নিচ্ছেন খুব সতর্ক হওয়া উচিত, কাকে দল দিচ্ছেন কাকে দল দিচ্ছেন না। দিনশেষে একটা দল যদি খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিতে না পারে।
‘অতীতে এমন হয়েছে ৫০ শতাংশ বাকি, শেষপর্যন্ত দর কষাকষি করে ২৫ শতাংশ দিয়ে খুশি হয়ে চলে যায়। দোষ তো খেলোয়াড়দের না। ওরা তো ১৬ ম্যাচ ভালো করে। দোষ হলে ফ্র্যাঞ্চাইজি ও বিসিবির। ওরা এই দর কষাকষি কেন খেলোয়াড়দের সাথে করে? এখনও শেষ হয়নি। আশা করি সমাধানের চেষ্টা করবেন। এমন যেন না হয়। এটা শুধু বিপিএলকেই ছোট করে না। দেশের ব্যাপারেও বাজে বার্তা দেয়। অনেক বিদেশি ক্রিকেটার আসতে চায়। এসব হলে সমস্যা হয়ে যায়। ফ্র্যাঞ্চাইজি ঠিকঠাক বেছে নেওয়া সবচেয়ে জরুরি’
বিপিএলে আসা অনেক বিদেশি তামিমের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানিয়েছেন। পারিশ্রমিক ইস্যুটি তাদের সামনেও যাওয়ার কথা। এখন নতুন করে বিদেশি ক্রিকেটারদের আনতে গেলে কি ভোগান্তিতে পড়তে হয় তামিমকেও?
উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি সুবিধা পেয়ে যাই কারণ গত ৪-৫ বছর ধরে ফরচুন বরিশাল এসব দিক থেকে খুবই ভালো। এখন পর্যন্ত সব ঠিক আছে। ওদেরও বিশ্বাস হয়ে যায়, অন্য যারা খেলে যায় ওরাও কথাবার্তা বলে। এই টুর্নামেন্ট অনেক উন্নতি করতে পারবে। যে পরিমাণ দর্শক এবার আসল, গত ২-৩ মৌসুমে দেখিনি। কাজগুলো ঠিকঠাক করলে, সঠিক মানুষ বেছে নিলে এই টুর্নামেন্টের অনেক সম্ভাবনা আছে।
বিপিএলে এমনিতেও ভালো বিদেশি পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে কারণ হিসেবে অনেকে সামনে আনেন একই সময়ে আরও কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ থাকাকে। এ নিয়েও কথা বলেন তামিম।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় বিপিএলের প্রথম শিডিউল ছিল অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে। এটা ভালো সময় ছিল। এ সময় এসএ-টোয়েন্টি ও আইএলটি-টোয়েন্টি এই দুই মেজর লিগের সাথে সাংঘর্ষিক হবে না। একবার সূচি পরিবর্তন হয় বাংলাদেশ দলের খেলা থাকায়। এছাড়া ঐ সময়েই হতো। কারণ তখন তেমন খেলা থাকে না। তখন শুধু হয়ত আবুধাবি টি-টেন। একটা টুর্নামেন্টের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়া দুটার চেয়ে ভালো।
‘দুই বিদেশি না, আমার মতে চার বিদেশিই ঠিক আছে। পিএসএলে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি বিদেশি খেলতে যায়। অথচ পিএসএলে দল ছিল পাঁচটি। ওখানে ক্রিকেট কোয়ালিটি এতটাই ভালো। আমরা ৭-৮টি দিয়ে শুরু করেও… খেলোয়াড়রা বলতে পারে দল বেশি থাকলে লোকাল প্লেয়ারদের খেলার সুযোগ বাড়ে। তবে দল কম হলে প্রতিযোগিতাও তো বাড়ে। এনসিএল, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করার ক্ষুধা বাড়বে। আমার মতে ৬ দলের বেশি হওয়া উচিৎ নয়। ৫ দল হলে ভালো হয়। ’
বিপিএলে এসব সমস্যা সমাধানে ভবিষ্যতে তামিম দায়িত্ব নেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ্… বিপিএল একটা অংশ, তবে আরও অনেক জায়গা আছে যেখানে উন্নতি দরকার।